How Mamta spends on huge Gifts, when she claimed she doesn't take salary or MP pension?

বেতন-পেনশনে না, তবু খামতি নেই উপহারের মমতায়

নিজস্ব সংবাদদাতা (সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা)

কলকাতা, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ 

বিনা মাইনেতে উপহার কেনার পয়সা আসে কোথা থেকে? 

নন্দীগ্রামে পুলিশের গুলিচালনার পরের দিনের দুপুর। রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গাঁধী তমলুকে জেলা হাসপাতালে আসছেন, খবর হয়েছে। তড়িঘড়ি বেরিয়ে পড়ার আগে ব্যাগ খুলে তমলুকের বেসরকারি হোটেল মালিকের হাতে এক তাড়া নোট ধরিয়ে দিলেন তিনি। মুখে বরাভয়ের ভঙ্গিতে একটা বাক্য “এটা রাখো!”

হোটেল মালিক তখন প্রায় পায়ে পড়েছেন! এতগুলো প্রাণহানির মর্মান্তিক ঘটনার পরে তিনি টাকা নিতে নারাজ। সাংসদ বললেন, আগের দিন থেকে তিনি ও তাঁর দলের সহকর্মী এবং সংবাদমাধ্যমের লোকজন যে ওই হোটেলে ঠাঁই নিয়েছিলেন, তারই কৃতজ্ঞতাস্বরূপ কিছু টাকা রাখতেই হবে। তর্কের অবকাশ না রেখে কালো স্করপিও চেপে রওনা দিলেন তিনি।

সে দিনের সাংসদ জানতেও চাননি, হোটেলের বিল কত হয়েছিল! হাতে ধরে কিছু টাকা তুলে দিয়েছিলেন মাত্র। আজ মুখ্যমন্ত্রী হয়েও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানার চেষ্টা করেন না, খরচ কত হতে পারে! শুধু পুজোর সময় এলে তাঁর দেওয়া উপহারের প্যাকেট পৌঁছে যায় তাঁর প্রশাসনের কর্তা থেকে শুরু করে বহু বিদ্বজ্জন-সহ তাঁর ঘনিষ্ঠ জনেদের কাছে। এ বারও যেমন পৌঁছেছে নামী ব্র্যান্ডের কুর্তা-পাজামা, শাড়ি-সালোয়ার বা কোথাও স্যুট লেন্থ।

কালো স্করপিও-র আরোহী সেই সাংসদের টাকা মেটানো নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি। কারণ, তিনি তখন সাংসদ এবং সেই হিসেবেই বেতন পান।

"সারদা চিটফান্ড থেকে সবথেকে বেশী সুবিধা পেয়েছেন যিনি,
তার নাম মমতা ব্যানার্জ্জী"

সাদা স্করপিও-য় চেপে পুজোর পর পুজো উদ্বোধন করে চলেছেন যে মুখ্যমন্ত্রী, তাঁর উপহার নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন তোলার অবকাশ থাকছে! কারণ, তাঁর নিজেরই ঘোষণামাফিক মুখ্যমন্ত্রী হয়ে গত সাড়ে তিন বছরে তিনি না নিয়েছেন বেতন, না তুলেছেন সাংসদ হিসাবে তাঁর পেনশন!

সাংবাদিকদের উপহার বিলিয়ে কেন্দ্রীয় এক মন্ত্রীকে যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তিরস্কারের মুখে পড়তে হয়, এ রাজ্যে তখন আরও জাঁকিয়ে বসে ‘উপহার সংস্কৃতি’! প্রশ্নটা হঠাৎই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে অবশ্য দক্ষিণী আম্মার সৌজন্যে! সারদা-কাণ্ড নিয়ে যখন এ রাজ্য তোলপাড়, তখন জয়ললিতার জেল-যাত্রা নিয়ে উত্তাল তামিলনাড়ু এবং গোটা দেশও। আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি রাখার মামলায় তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর চার বছরের কারাদণ্ড এবং ১০০ কোটি টাকা জরিমানা হয়েছে! মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সময়ে যে জয়ার সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ২ কোটি ১ লক্ষ টাকা, মেয়াদ শেষে ১৯৯৬ সালে সেটাই বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭ কোটিতে। অথচ মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তিনি সরকারি কোষাগার থেকে মাসে ১ টাকা প্রতীকী বেতন নিতেন! তার মানে হিসাব করলে পাঁচ বছরে যাঁর আয় হয়েছে সাকুল্যে ৬০ টাকা, ওই সময়ে তাঁর সম্পত্তি হয়েছে ৬৬ কোটি টাকার!

দক্ষিণের আম্মা তবু মাসে ১ টাকা বেতন নিতেন। বঙ্গের দিদি সরকারি কোষাগার থেকে এক পয়সাও নেন না! তা হলে এমন অবৈতনিক মুখ্যমন্ত্রীর ঢালাও উপহারের খরচ কোথা থেকে আসে? কে মেটায়? গুঞ্জন, কৌতূহল উড়ে বেড়াচ্ছে শারদীয়া বাতাসে!

নবান্নের খবর, ২০১১ সালের মে মাসে ক্ষমতায় আসার পরেই মমতা জানিয়েছিলেন, তিনি সরকারের থেকে বেতন নেবেন না। সরকারি নিয়ম মেনে প্রতি মাসে তাঁর নামে বেতনের চেক তৈরি করে কলকাতা ট্রেজারি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তা প্রত্যাখ্যান করার পরে সেই চেকটি ট্রেজারি আবার নষ্ট করে দেয়। গত ৪০ মাস ধরে এমনই চলছে। অথচ এই ৪০ মাসেই পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে মুখ্যমন্ত্রীর উপহারের বহর! তৃণমূল সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ কিছু মন্ত্রী-নেতা, সাংসদ-বিধায়ক, টলিউড ব্যক্তিত্ব, ব্যবসায়ী এবং সাংবাদিকেরাও আছেন প্রাপকের তালিকায়। সরকারের বিভিন্ন দফতরের সচিব, জেলাশাসক, পুলিশ-কর্তা, এসপি এবং তাঁদের স্ত্রীরাও আছেন। সঠিক সংখ্যা কেউ না জানাতে পারলেও তালিকা কিন্তু খুব ছোট নয়! ঘনিষ্ঠদের মতে, দু-তিন হাজারও হতে পারে!  শুধু ঘনিষ্ঠ জনই নয়, প্রতি বছর পুজোর সময় নিয়ম করে বৃদ্ধাবাসে জামাকাপড় পাঠিয়ে থাকেন মমতা। এ বারও তার অন্যথা হয়নি। সোমবারই একটি বৃদ্ধাবাসে পৌঁছেছে তাঁর উপহার। পুজোর মরসুমে তাঁর গাড়িতে রাখা থাকে বিভিন্ন বয়সের উপযোগী জামাকাপড়। পথচলতি কাউকে দেখে মনে হলেই মমতা কিছু দিতে কার্পণ্য করেন না। শুধু নিকট বৃত্ত নয়, বহু অনাথ-আতুর এই ভাবেই মমতার উপহার পেয়ে থাকেন।

আয় বহির্ভূত সম্পত্তি থাকার জন্য জয়ললিতা জেলে

মুখ্যমন্ত্রী বলে নয়, ব্যক্তি মমতা নিজেই বরাবর উপহার দিতে ভালবাসেন। সেই বিরোধী নেত্রী বা রেলমন্ত্রী থাকার সময়েও তাঁর পছন্দের এবং ঘনিষ্ঠ লোকেদের হাতে প্রীতি-উপহার তুলে দিতেন তিনি। শুধু পুজোর মরসুম বলেই নয়, তাঁর ঘনিষ্ঠদের ব্যক্তিগত জীবনের স্মরণীয় দিনেও পৌঁছে গিয়েছে মমতার উপহার। তবে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল যত কলেবরে বেড়েছে, উপহারও তত বেড়েছে! বিরোধী নেত্রী থাকার সময়ে মমতা ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন, তাঁর নিজের খরচা বলতে বিশেষ কিছু নেই। সাংসদ হিসাবে বেতনের টাকা সঞ্চয় করে যা ব্যাঙ্কে আছে, তা থেকেই সামান্য উপহার দিয়ে থাকেন। কিন্তু এখনকার প্রশ্ন, কলসির জল গড়াতে গড়াতে এক দিন তো ফুরোবে! আয় না থাকলে কুবেরের ধনও ফুরোয়! অন্নপূর্ণা মুখ্যমন্ত্রীর উপহারের স্রোত তা হলে চলতেই থাকছে কী ভাবে?

স্বাভাবিক ভাবেই মমতার প্রশাসন বা দলের কেউ এই নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। প্রতি বছর উপহার প্রদানের এই প্রক্রিয়ায় বড় ভূমিকা থাকে কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের। তিনিও মুখ খোলেননি।

তৃণমূলের এক নেতা অবশ্য বলছেন, “উপহার দিতে দিদি কোনও দিনই কার্পণ্য করেননি। বই লিখে রয়্যালটি বাবদ কিছু টাকা পান। সে সব দিয়ে উনি চালিয়ে নেন।” আর রাজ্য সরকারের এক আধিকারিকের কথায়, “ভেবে দেখতে গেলে, যিনি বেতন নেন না, তাঁর পক্ষে হাওয়াই চটিও কেনা সম্ভব নয়! কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ভালবেসে কিছু উপহার দেন। কোথা থেকে দেন, সে সব নিয়ে ভাবিনি কখনও!”

শাসক দলেরই একটি অংশের বক্তব্য, দলেই তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েক জনকে উপহার কেনার দায়িত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বারেও তার অন্যথা হয়নি। তবে সেই ঘনিষ্ঠদের টাকার উৎস কী, সেই প্রশ্নের জবাব অজানা!

দান-খয়রাতির জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য ইতিমধ্যেই নাম কুড়িয়েছেন। ক্ষমতায় আসার পরে তাঁর সরকার রাজ্য জুড়ে নানা নামে উৎসবের মেলা বসিয়ে দিয়েছে। তাঁর সরকারের দাক্ষিণ্য পেয়ে চলছে কয়েক হাজার ক্লাব। প্রতি বছর একাধিক নামে পুরস্কারও চালু করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সব মিলিয়ে সরকারের পরিকল্পনা ও পরিকল্পনা বহির্ভূত খাত থেকে ফি-বছর কয়েকশো কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। একই ভাবে চলছে তাঁর নিজস্ব উপহার সংস্কৃতি। বিরোধী শিবিরের এক নেতার কথায়, “কষ্টের সংসার বলে রোজ আক্ষেপ করেন যিনি, তিনিই ক্লাবকে লক্ষ লক্ষ টাকা অনুদান দেন। যিনি নিজে রোজগারহীন, তিনি দিব্যি উপহার দেন।”

দিল্লিতে তাঁর সরকারের এক মন্ত্রীর উপহার-সংস্কৃতির কথা জানতে পেরে রীতিমতো রুষ্ট হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দিল্লিতে সম্প্রতি এক সাংবাদিক সম্মেলনে ‘সৌর লন্ঠন’ উপহার দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ ও কয়লামন্ত্রী পীযূষ গয়াল। জানতে পেরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সকলের সামনেই পীযূষকে সতর্ক করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলায় সে সবের প্রশ্ন নেই! স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বিলোচ্ছেন। কারণ, বিলোতে তিনি ভালবাসেন।

আরও পড়ুন -

ত্রাণ তহবিলে করের আরও ৪ কোটি

Letter To West Bengal CM

মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু

আপনি ক্ষমা না করলে আমার সর্বনাশ

‘আমি আর কিছু চাই না। শুধু আপনার আশীর্বাদ। আমি বোকা বলে কেউ আমায় কাজ দেয় না। আপনার আশীর্বাদ পেলে আগামী চার পুরুষ আমাদের অন্তত খাওয়ার চিন্তা থাকবে না।’ সুপর্ণ পাঠক

২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, 
(সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা)

মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু

নবান্ন

হাওড়া

শ্রীচরণেষু দিদি,

প্রথমেই আমার ও আমার বৃদ্ধা মা সহ আমার পরিবারের প্রণাম নেবেন।

এই চিঠি আমার আশি বছরের মায়ের নির্দেশেই। এই রাজ্যের অনেকের মতোই উনিও বিশ্বাস করেন, মহাশক্তির অংশে আপনার জন্ম। আপনার আশীর্বাদের হাত যার মাথায়, তাকে যমেও ছুঁতে ভয় পায়। তাই দূর গাঁয়ের মানুষ হয়েও ওঁর ইচ্ছা, কালীঘাটে মাকে প্রণাম করে ফেরার পথে এক বার আপনার পদধূলি মাথায় ছোঁয়াবেন। তাতেই নাকি ওঁর সব পাপ ক্ষালন হয়ে যাবে।

আপনার যে শক্তির অংশে জন্ম, তা উনি অনেক দিন থেকেই বলেন। তাঁর মতে, সাধারণ মানুষ তাদের অজ্ঞতার জন্যই দীর্ঘকাল আপনার শক্তিকে উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছিল। দৈবের বিধিই এমন যে, অজ্ঞ সমাজকে আগুনের মধ্য দিয়ে আত্মশুদ্ধি করতে হয়, চিত্ত শুদ্ধ হলেই তবেই মানুষ শক্তিরূপিণীকে চিনতে পারে। যখন আপনার জয়ের খবর এল, মা তখন হাত জোড় করে বলেছিলেন, ‘এ বার দেশে ধর্ম ফিরবে।’

আমি দিদি অতশত বুঝি না। খালি এটা বুঝি, আপনি ক্ষমা না করলে আমার সর্বনাশ অবধারিত। দাদা বলেন, আমার বুদ্ধিতে নাকি গোবরের আধিক্য। তা সে যতই গোবর হোক, নিজের হিতাহিত বোঝার ধকটুকু আছে। তার উপরে মায়ের বকুনি। আগের চিঠিটার কথা উনি জানতেন না। সর্বনাশটা হয়েছিল গাঁয়ের এক দাদাকে চিঠিটা দেওয়ায়। আপনার কাছে পৌঁছে দিতে বলেছিলাম, কিন্তু তিনি রগড় করতে তাঁর কলকাতার এক সাংবাদিক বন্ধুর হাতে সে চিঠি তুলে দেন। আর সে আরও রগড় করে খবরের কাগজে ছাপিয়ে দেয়।

সেই চিঠিতে তো আমি যা লিখেছিলাম তার নাকি মানে দাঁড়ায় যে, আপনি স্বৈরাচারী। এই শব্দটার মানে আমি ঠিক জানতাম না। আসলে হয়েছিল কী, সেই যে বাচ্চার ডাক্তার, যে নাকি কলকাতার সরকারি হাসপাতালে সদ্যোজাতদের বাঁচানোর জন্য কী সব ব্যবস্থা করেছিল কম টাকায়। কিন্ত লোকটা ঠেঁটা ছিল। তাকে কেমন শাস্তি দিলেন। সেটা দেখেই আমি ওই চিঠি লিখি। আমি লিখেছিলাম, ক্ষমতায় এসেই আপনি যে এই হাতে মাথা কাটছেন, তা ঠিক হচ্ছে না। তখন ছাই বুঝিনি যে আসলে আপনি কী করছেন। কিন্তু মা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, লোকশিক্ষের জন্য শক্তিপ্রদর্শন করতে হয়, আপনি ওই ডাক্তারটাকে শাস্তি দিয়ে লোককে শিক্ষে দিয়েছিলেন। সে নাকি এখন দিল্লি পালিয়েছে। তবে? যদি সেই ধকই থাকত তা হলে কি পালাত? তখন আমি এ-সব বুঝিনি তো, কী করব? বোকা মানুষ। তাই তো লোকে আমায় বেকুব বলে।

এটাই মোদ্দা কথা। শক্তির অংশ কি না তা তোমার বোঝার দরকার নেই। সে কঠিন কথা। সোজা কথা সোজা ভাবে বোঝ না বাপু। রাজ্যে থাকবে আর রাজাকে থুড়ি রানিকে  মানবে না? তার পরেও যদি আইন তোমার বিরুদ্ধে যায়, রাজপেয়াদার হুড়কো খাও, তখন লাফালাফি?

কিন্তু দেখুন, আপনার অনুগত যে, তাকে তো কোথাও বদলি হতে হয় না! এই যে অনুব্রত। সবাই তো সেই কবে থেকে ওর ন্যাজ মুচড়োতে চাইছে। চাইছে কি না? কিন্তু আপনার আশীর্বাদের হাত ওর মাথায় আছে, সুতরাং কেউ কুটোটি নাড়তে পারছে না। কিংবা ধরুন, উত্তরবঙ্গে কী একটা মশা কামড়ানো রোগে সব মারা পড়ছিল। আপনি বললেন, ‘ধুস!’ অমনি সব মশা ফুস হয়ে গেল, সব মরা অমনি বন্ধ। গেল কি না? তবে? হ্যাঁ, মা সব বুঝিয়ে দিয়েছেন আমায়। মা যা বোঝেন, তা এই শহুরে বাবুরা এত বুদ্ধি নিয়ে কেন যে বোঝে না!

বলে কিনা, ‘রাজধর্ম পালন কর।’ বলিহারি যাই বাবা! আরে, রাজধর্ম কি রাজদণ্ড ছাড়া পালন করা যায়? সবাই মিলে ভোট করে রাজ্যপাট দিয়েছ, আর এখন বলছ শাসন কোরো না? এই যে চ্যাংড়ার দল। বলে কিনা ভিসির চামড়া গুটিয়ে দেবে! বোঝো আবদার! তো, শিশুর দল আজগুবি আবদার করবে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু রানি, তিনি তো নাগরিকের অভিভাবক, মাতৃতুল্য। যখন শিশুরা অন্যায় আবদার করে, তখন মা তাদের শাসন করেন না? এরা এটাই বুঝতে পারছে না যে আপনি শুধু মায়ের ভূমিকায় বাচ্চাদের শাসন করেছেন মাত্র। আবার বলে, গণতন্ত্র নেই। আরে, মা তার সম্তানকে শাসন করছে, তাতে আবার তন্ত্রটন্ত্র টানা কেন বাবা?

বাবুদের আবার ভিসির ভয় পাওয়া নিয়েও আপত্তি। চামড়া গুটিয়ে নেওয়ার স্লোগান নাকি বহু পুরনো। তা হবে। কিন্তু উনিও চাড্ডি বই পড়েই ভিসি হয়েছেন, না কি! এক বার ভাবুন তো, রামের ডাকে এই বাঁদরকুল কী লঙ্কাকাণ্ডই না করেছিল? তা উনি কোন ভরসাতেই বা রামভক্তদের মন পড়তে যাবেন? কী করেই বা জানবেন, দেবীপক্ষের প্রাক্কালে এরা সব রক্তবীজ নয়? এমতাবস্থায় সবাই যা করে, উনিও তাই করেছেন। দিদি, উনি আপনাকে স্মরণ করেছেন। ভক্তের আহ্বানে আপনাকে তো শক্তিরূপেই প্রকট হতে হবে। তা-ই হয়েছেন। বাবুরা হতভাগ্য, পাপীতাপী, আপনার দৈব অংশকেই আসুরিক বলে মনে করে লম্ফঝম্প করছেন।

দিদি, আপনার সময় কম। সবাই বলে, আপনার এত কাজ যে এক গোছা সচিব নিয়েও তা সামলানো মানুষের পক্ষে অসম্ভব, বিশেষ করে এই অর্বাচীনের রাজ্যে। বহুভুজা না হলে ওই রকম চকচকে পরিষ্কার কাজের টেবিল হতে পারে কি? তারই মাঝে আমার এই চিঠি। আপনি খামের উপর চোখ বোলালেই বুঝে যাবেন আমার মনের কথা। তবুও এতটা লেখা, কারণ যদি কোনও সচিব— সে তো আপনার মতো অন্তর্যামী নয়— সাদা কাগজ দেখে দুষ্টু লোকের চ্যাংড়ামি ভেব ফেলে দেয়! তাই এতটা লিখে আমাকে প্রমাণ করতে হল যে কতটা অনুতাপ আমার হয়েছে।

আমি আর কিছু চাই না। শুধু আপনার আশীর্বাদ। আমি বোকা বলে কেউ আমায় কাজ দেয় না। আপনার আশীর্বাদ পেলে আগামী চার পুরুষ অন্তত খাওয়ার চিন্তা থাকবে না।

ইতি

আপনার একান্ত অনুব্রততুল্য অনুগত আশীর্বাদপ্রার্থী

শ্রীমান বেকুব


The State Sponsored Terror in West Bengal

Mamta destroys democracy, pushed Bengal towards anarchy

সম্পাদকীয় ১

নৈতিকতার দায়

২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, 
(সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা)

মুড়ি নারকেল খাওয়াইবার সুপরামর্শে রাজ্যের অন্ধকারগুলি ঢাকা পড়িতেছে না। কলিকাতা হাইকোর্ট দ্ব্যর্থহীন ভাষায় পাড়ুই মামলায় রাজ্য পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করিয়াছে। শুধু পাড়ুই মামলাতেই নহে, রাজনৈতিক চাপের নিকট মেরুদণ্ড বিসর্জন দেওয়া পুলিশের অভ্যাস হইয়া উঠিয়াছে। সারদা-কাণ্ড বড় উদাহরণ। তাপস পাল-কাণ্ডেও পুলিশ ধ্যানমগ্ন ছিল। শুধু পুলিশ নহে, যতগুলি প্রতিষ্ঠানকে নষ্ট করা সম্ভব, তাহাদের নিরপেক্ষতা লঙ্ঘন করা সম্ভব, সরকার করিয়াছে। রাজ্যের মানবাধিকার কমিশন নীরব হইয়াছে, মহিলা কমিশন সরকারের সানাই বাজাইতে ব্যস্ত। অন্ধকারের শাসন প্রতিষ্ঠা করিতে যাহা করণীয়, মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁহার পাইক-বরকন্দাজরা কিছুই বাদ রাখেন নাই। পশ্চিমবঙ্গের সরকার যে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অনাগ্রহী, বিভিন্ন সাম্প্রতিক মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণে কথাটি স্পষ্ট। সিবিআই আদালতের দ্বারস্থ হইয়া জানাইয়াছে, সারদা মামলার তদন্তে যত রকম অসহযোগিতা সম্ভব, রাজ্য পুলিশ করিতেছে। দেখা যাইতেছে, রাজ্যের শাসকদের নিয়ন্ত্রণে থাকা কোনও প্রতিষ্ঠানের উপরই কাহারও আর ভরসা নাই। পুলিশ, আমলাতন্ত্র যে ভাবে রাজনৈতিক প্রভুদের নিকট জোড়হস্ত হইয়াছে, তাহাতে ভরসা থাকিবার কারণও নাই। সেই কারণেই সিবিআইয়ের মুখাপেক্ষী না হইলে এই রাজ্যে তদন্ত হয় না, আদালতের দ্বারস্থ না হইলে সুবিচার মেলে না। এই অন্ধকার অতি অস্বাভাবিক।

পশ্চিমবঙ্গে কেন, গোটা দেশের ইতিহাসেই এমন সুতীব্র পক্ষপাতী, দলতন্ত্রে বিশ্বাসী ও নীতিজ্ঞানহীন শাসক বিরল। এই অন্ধকারে আইনের শাসন বজায় রাখিবার দায় হইতে আমলাতন্ত্র ও পুলিশের কর্তারা অব্যাহতি পাইবেন না। পাড়ুই মামলায় কলিকাতা হাইকোর্ট রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশককে তলব করিয়াছিল। তিনি আদালতে সরকারের প্রতিনিধিরূপেই উপস্থিত ছিলেন বটে, কিন্তু শুধু সেটুকুই নহে। তাহা ব্যক্তি জিএমপি রেড্ডিরও উপস্থিতি। সেই ব্যক্তি, দেশের সংবিধান যাঁহাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব দিয়াছে। তিনি যখন আদালতে দাঁড়াইয়া অনুব্রত মণ্ডলকে নির্দোষ ঘোষণা করিতেছিলেন, অথবা কলিকাতার নগরপাল যখন যাদবপুর কাণ্ডে নিরস্ত্র পুলিশের উপর সশস্ত্র বহিরাগতদের চড়াও হওয়ার আষাঢ়ে গল্প ফাঁদিতেছিলেন, তখন তাঁহারা এই সংবিধানের অবমাননা করিয়াছেন। তাঁহারা নিজেদের সত্তার অবমাননা করিয়াছেন।

যাহা করিয়াছেন, উপরমহলের নির্দেশেই— এমন কথা বলিয়া নৈতিকতার বিচার পার হইবার উপায় তাঁহাদের নাই। ক্ষেত্রবিশেষে উপরমহলের আদেশ অমান্য করাই যে নৈতিক কর্তব্য, এই কথাটি বিভিন্ন সময়ে উচ্চারিত হইয়াছে। যথা দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পরে নাত্সি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় প্রসিদ্ধ নুরেমবার্গ মামলায়। সেই মামলার সূত্রে সঙ্কলিত ‘নুরেমবার্গ নীতি’র চতুর্থ অনুচ্ছেদ স্পষ্ট বলিতেছে, এমন পরিস্থিতি উপস্থিত হইতেই পারে যেখানে চাকুরির সংকীর্ণ কর্তব্যের সহিত বৃহত্তর নৈতিকতার বিরোধ প্রত্যক্ষ। তখনও যদি কেহ নৈতিকতাকে অগ্রাধিকার না দেন, উপরমহলের অন্যায় আদেশ অমান্য করিবার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও যদি তাহা না করেন, তবে তিনি অপরাধী। আদেশ অমান্য করিবার মধ্যে কর্তব্যে অবহেলা নাই, বরং বৃহত্তর কর্তব্যের প্রতি প্রশ্নাতীত দায়বদ্ধতা রহিয়াছে। সেই কর্তব্য নৈতিকতার নিকট, নিজস্ব ন্যায়বোধের নিকট। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে আমলাতন্ত্র বা পুলিশ মন্ত্রিসভার নির্দেশ মানিয়া চলিবে, ইহাই প্রত্যাশিত। কিন্তু, সরকার এই রাজ্যে স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখিতে পারে নাই। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে গণতন্ত্রের পক্ষে যাহা শোচনীয়, এখন তাহাই গণতন্ত্রকে রক্ষা করিতে পারে। পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকদের বিবেকের কণ্ঠ শুনিলে হয়তো পশ্চিমবঙ্গ বাঁচিবে।


মমতার নিজের পুলিশে আস্থা নেই, পাশে চান দিল্লিকেই

Commerce Graduate appointed as Pharmacy Council Registrar by Mamta Govt. in Bengal

ফার্মেসি কাউন্সিল রেজিস্ট্রার বাণিজ্যে স্নাতক, নয়া বিতর্ক

রোশনী মুখোপাধ্যায় (সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা)

কলকাতা, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

নিয়ম ভেঙে রেজিস্ট্রার নিয়োগের অভিযোগ উঠল রাজ্যের ফার্মেসি কাউন্সিলের বিরুদ্ধে। এবং এ বারও বিতর্কে স্বাস্থ্য বিষয়ক পরিষদীয় সচিব এবং তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মাজি। যিনি ফার্মেসি কাউন্সিলেরও প্রেসিডেন্ট। যিনি সরকারি চিকিৎসকদের একাংশের ‘জ্যান্ত পুতুল’ পোড়ানোর কথা বলে সম্প্রতি বিতর্কে জড়িয়েছিলেন।

কেন্দ্রের ফার্মেসি কাউন্সিলের নির্দেশিকায় বলা আছে, রাজ্যগুলির ফার্মেসি কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার পদে নিযুক্ত হতে গেলে ফার্মেসিতে স্নাতক অথবা ডিপ্লোমাধারী হতে হবে। আর ওই দুই ধরনের প্রার্থীর মধ্যে অগ্রাধিকার পাবেন স্নাতক প্রার্থীই। কিন্তু এ রাজ্যের ফার্মেসি কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার পদে যাঁকে নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁর ফার্মেসিতে ডিগ্রি বা ডিপ্লোমা নেই। তিনি বাণিজ্যে স্নাতক!

কোন ওষুধের কী কাজ, কত মাত্রায় তা প্রয়োগ করা উচিত ইত্যাদি বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা দেন ফার্মাসিস্টরা। অর্থাৎ তাঁদের পেশার সঙ্গে মানুষের জীবন-মৃত্যু জড়িয়ে আছে। এই স্বাস্থ্য কর্মীদের সামান্য ভুলও রোগীর পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে। এ হেন গুরুত্বপূর্ণ পেশার লাইসেন্স দেয় রাজ্য ফার্মেসি কাউন্সিল। সেখানেই এমন অনিয়মে প্রমাদ গুণছেন কাউন্সিলের সদস্যদের একাংশ। তাঁদের প্রশ্ন, ফার্মেসির জ্ঞান না থাকা এক জনকে কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার করায় ওষুধ সংক্রান্ত পরিষেবায় বিপজ্জনক প্রভাব পড়বে না কি? মেডিক্যাল অ্যান্ড সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সুমহান চক্রবর্তীর কথায়, “ফার্মেসি কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার ফার্মাসিস্ট নন। এ বার তিনি যদি অযোগ্য কাউকে ফার্মাসিস্ট হওয়ার লাইসেন্স দিয়ে বসেন, তা হলে রোগীদের সাঙ্ঘাতিক বিপদ হবে!” নিমর্লবাবুরা অবশ্য এমন আশঙ্কা নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ। তাঁর পাল্টা বক্তব্য, বরং ফার্মাসিস্ট রেজিস্ট্রার হলে তিনি নিজের মতো ‘সিন্ডিকেট’ গড়ে তুলতে পারতেন!

রাজ্যের ফার্মেসি কাউন্সিল সূত্রের খবর, সংস্থার রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগের জন্য জুলাই মাসে একটিমাত্র সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, যে কোনও শাখার স্নাতকেরাই ওই পদের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদনকারীদের মধ্যে অনেকেই অবশ্য ছিলেন ফার্মেসিতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী। কিন্তু তাঁদের কাউকেই ইন্টারভিউয়ে ডাকা হয়নি। অগস্ট মাসের শেষে ইন্টারভিউ হয়। তাতে ডাক পান ফার্মেসি ব্যতীত অন্য শাখার পাঁচ জন স্নাতক। শেষ পর্যন্ত রেজিস্ট্রার পদে যাঁকে নিয়োগ করা সায়ক হালদারকে। তিনি বাণিজ্যে স্নাতক। কী ভাবে ফার্মেসিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীদের ডিঙিয়ে তিনি ওই পদে যোগ্য বিবেচিত হলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে কাউন্সিলেই।

এ নিয়ে কথা বলার জন্য সায়কবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ফল মেলেনি। তাঁকে ফোন এবং মেসেজ করেও সাড়া মেলেনি। তবে কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট নির্মলবাবু বলেন, “বাম জমানাতেও রাজ্য ফার্মেসি কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার পদে চাকরি পেতে যে কোনও শাখার স্নাতক হলেই চলত। আমরা সেই নিয়ম বদলাইনি।”

উপরন্তু, রেজিস্টার্ড ফার্মাসিস্টকে কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ করা হলে ‘সিন্ডিকেট’ সমস্যা দেখা দিতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন নির্মলবাবু। তাঁর বক্তব্য, “ফার্মাসিস্ট রেজিস্ট্রার হলে নিজের ছাত্রজীবনের সূত্রে ফার্মেসির ছাত্রদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় থাকে। সেই সুবাদে সিন্ডিকেট করে নানা সুযোগ সুবিধা ভোগ করেন ফার্মেসির ছাত্ররা। সেটা ঠিক নয়!”

কিন্তু কেন্দ্রের ফার্মেসি কাউন্সিলের নির্দেশিকায় তো স্পষ্ট বলা আছে, রাজ্য ফার্মেসি কাউন্সিলের রেজিস্ট্রারকে রেজিস্টার্ড ফার্মাসিস্ট হতে হবে! পাশাপাশি, তাঁর তিন বছরের প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাও থাকা বাঞ্ছনীয়। নির্মলবাবুর জবাব, “আমরা তো রাজ্যের নিয়মে চলি! দিল্লি যদি কিছু বলে, তখন সেই অনুযায়ী সংশোধন করা হবে। এখনই তার দরকার নেই।” তাঁর আরও বক্তব্য, “রাজ্য ফার্মেসি কাউন্সিলের প্রাক্তন রেজিস্ট্রারের মেয়াদ বাড়িয়ে কাজ চালানো হচ্ছিল। কিন্তু তিনি আর দায়িত্ব নিতে চাইছিলেন না। তাই নিয়মমাফিক ইন্টারভিউ করে নতুন রেজিস্ট্রার নিয়োগ করা হয়েছে।”

শিশুদের অপুষ্টির মোকাবিলায় লাড্ডু খাওয়াবে রাজ্য সরকার

শিশুদের পুষ্টির ঘাটতি পূরণে এ বার মমতার লাড্ডু

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

ছেলের হাতে মোয়া নয়। এ বার ছেলের হাতে লাড্ডু। দিল্লির ফর্মুলায় তৈরি। তবে দিল্লি কা লাড্ডু নয় মোটেই। মমতার লাড্ডু। খেলে পস্তাতে হবে না। বরং পুষ্টি হবে। কারণ, এ লাড্ডু পুষ্টিকর। তাই শিশুদের অপুষ্টির মোকাবিলায় এই লাড্ডু খাওয়াবে রাজ্য সরকার।

পোশাকি নাম ‘পৌষ্টিক লাড্ডু’। তবে এ লাড্ডু দালদা-মিষ্টির মিশ্রণে তৈরি নয়। চাল-গম-বাদাম, মুসুর ডালের গুঁড়ো, তেল, ভিটামিন এবং সামান্য চিনি দিয়ে তৈরি হচ্ছে এই পুষ্টিকর লাড্ডু। ফর্মুলা বার করেছে দিল্লির জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টি পর্ষদ।

ছ’বছর পর্যন্ত শিশুদের জন্য এই লাড্ডু প্রকল্প বাংলারই। খাদ্য ভবন সূত্রের খবর, সারা রাজ্যে এই মুহূর্তে নবজাতক থেকে শুরু করে ছ’বছর বয়সের ৫৮ হাজার শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। শিশু-স্বাস্থ্যের এই হাল দেখে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। অপুষ্টির সঙ্গে লড়তে ১৯ সেপ্টেম্বর প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে লাড্ডু প্রকল্প দ্রুত চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনিই।

রাজ্যের সমাজকল্যাণ দফতরের সচিব রোশনী সেন বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জেলাশাসকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি। জেলার বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মাধ্যমে লাড্ডু তৈরি ও বিতরণের কথা ভাবা হয়েছে।” প্রথম পর্যায়ে নভেম্বরের মধ্যে রাজ্যের আটটি জেলায় ওই লাড্ডু খাওয়ানো হবে প্রায় ৩০ হাজার শিশুকে। এই খাতে বছরে খরচ হবে তিন কোটি টাকা। এর পরে কয়েকটি ধাপে সারা রাজ্যে অপুষ্টিতে আক্রান্ত ৫৮ হাজার শিশুই প্রকল্পের আওতায় আসবে।

কিন্তু ওইটুকু শিশুরা পৌষ্টিক লাড্ডু খাবে কী করে?

জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টি পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, খুব ছোটদের লাড্ডু গুঁড়ো করে জল বা দুধের সঙ্গে মিশিয়ে চামচ বা ঝিনুকে করে খাওয়ানো যাবে। পর্ষদের এক কর্তা জানান, প্রতিটি শিশুর জন্য রোজ বরাদ্দ চারটি লাড্ডু। মাসে ২৫ দিন। অপুষ্টির মাত্রা অনুযায়ী লাড্ডুতে উপাদানের পরিমাণও কম-বেশি হবে।

তবে শিশুদের শুধু লাড্ডু খাওয়ালেই অপুষ্টি-সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করছে না স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্যসচিব মলয় দে জানান, স্বাস্থ্য, সমাজকল্যাণ ও খাদ্য দফতর মিলিত ভাবে অক্টোবরের শেষ থেকে আরও একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে। গত এক বছরে (২০১৩ সালের জুন থেকে ২০১৪ সালের জুন) স্বাস্থ্য দফতরের ২৯টি ‘নিউট্রিশন রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার’ বা পুষ্টি কেন্দ্রে আসা গুরুতর অপুষ্টিতে ভোগা সাড়ে চার হাজার শিশুর পরিবারকে নিখরচায় রেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। শীঘ্র মধ্যেই কুপন বিলি শুরু হবে। সাধারণ রেশন দোকানেই মাসে এক বার ওই রেশন মিলবে। পরিবার-পিছু দেওয়া হবে পাঁচ কিলোগ্রাম চাল, আড়াই কিলোগ্রাম গম, এক কিলোগ্রাম মুসুরির ডাল এবং এক কিলোগ্রাম ছোলা।

এই রেশনে শিশুর অপুষ্টির মোকাবিলা করা যাবে কী ভাবে?

রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা মনে করেন, মা এবং পরিবারের অন্যেরা দু’বেলা ভাত-ডাল খেতে পেলে অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুও প্রয়োজনীয় খাবার পাবে এবং তার স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। স্বাস্থ্যসচিব মলয়বাবু জানান, সমাজকল্যাণ দফতরের অধীন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে গুরুতর অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের চিহ্নিত করে পাঠানো হয় পুষ্টি কেন্দ্রে। সেখানে শিশু ও মাকে ১৪ থেকে ২১ দিন রেখে পুষ্টিকর খাবার খাইয়ে অনেকটা সুস্থ করে বাড়ি পাঠানো হয়।

কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশের ক্ষেত্রে বাড়ি যাওয়ার পরে দু’বেলা ঠিকমতো খাবার না-পেয়ে ফের অপুষ্টির শিকার হয়ে পড়ছে শিশু। তাদের দীর্ঘমেয়াদি ‘নিউট্রিশন সাপোর্ট’ জোগাতেই রেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আপাতত ছ’মাস রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। পরে এর মেয়াদ বাড়ানো হবে।

পশ্চিমবঙ্গের নিজস্ব এই প্রকল্পও অনুমোদন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, রাজ্যে ছ’বছর পর্যন্ত বয়সের শিশুর সংখ্যা সাত লক্ষ। তার মধ্যে ৫৮ হাজার অর্থাৎ প্রায় ১০% শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। মুখ্যমন্ত্রী এই ৫৮ হাজার শিশুর পরিবারকেই রেশন প্রকল্পের আওতায় আনতে বলেছেন। সাড়ে চার হাজার শিশুর পরিবারকে ছ’মাস রেশন দিতে ৬৬ লক্ষ টাকা খরচ হবে। অন্যদেরও এর আওতায় আনা হবে। তবে তাতে কিছুটা সময় লাগবে। তত দিন ওই শিশুদের পুষ্টিকর লাড্ডু দেওয়া হবে।

পাল্টার রাজনীতি তাই বিশ্ববঙ্গের অনন্য ঐতিহ্য

সম্পাদকীয়

পাল্টা

২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, 
(সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা)

পশ্চিমবঙ্গে এখন শুধুই পাল্টা দানের খেলা। তুমি যাদবপুরের উপাচার্যের বিরুদ্ধে মিছিল করিলে কেন? তাহা হইলে আমিও তাঁহার সমর্থনে পাল্টা জনজোয়ার ডাকিব। কার্যক্ষেত্রে সে জোয়ার যতই অস্ফুট বুদ্বুদসম প্রতিভাত হউক না কেন, মিছিল তো হইল! তুমি চিট ফান্ডের প্রতারণার বিরুদ্ধে মিছিল ডাকিলে? বেশ, আমি এখনই সরকারবিরোধী চক্রান্তের বিরুদ্ধে পাল্টা মিছিল ও ধর্নার ডাক দিব। তুমি আলু-ব্যবসায়ী, আমার নির্ধারিত দামে ক্ষতি স্বীকার করিয়াও আলু বিক্রয় করিবে না? এখনই পাল্টা দিব, প্রয়োজনে ট্রাক আটকাইয়া আলু মিলনমেলায় আনিয়া সরকারি ভাবে বিক্রয়ের বন্দোবস্ত করিব, না পারিলে ধাপার মাঠে পাঠাইয়া দিব। কয়েক টন আলু পচিল বটে, কিন্তু বেয়াড়া ব্যবসায়ীগুলার পাল্টা শিক্ষা হইল! তুমি সংক্রমণের কারণকে জ্বর না বলিয়া এনসেফ্যালাইটিস দেখাইলে? এখনই পাল্টা দিব, তোমার হাত হইতে যাবতীয় দায়দায়িত্ব কাড়িয়া লইব। পাল্টা দানের এই খুচরো খেলা তাস, দাবার আসরে চলিতে পারে। কিন্তু এখানে রণনীতির মহাকাব্যিক বিস্তার নাই, শেষ অবধি হেক্টর বধ বা দুঃশাসনের রক্তপান কিছুই ঘটে না। তাহা সম্ভবও নহে। প্রাকৃত শব্দ পলট্ট হইতে আমদানিকৃত পাল্টা নামক বিশেষ্য পদটি বাংলার নিজস্ব অভিজ্ঞান। কবিগানে অন্য পক্ষকে উত্তর দানের নামই পাল্টা। তরজা-সংস্কৃতি বেয়েই বঙ্গভাষায় প্রত্যুত্তর শব্দের অর্থ: পাল্টা জবাব। পাল্টার রাজনীতি তাই বিশ্ববঙ্গের অনন্য ঐতিহ্য। বাংলাকে জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসন দান করিবার লক্ষ্যে নিবেদিতপ্রাণা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সেই ঐতিহ্যের অন্যতম ধারক ও বাহক হইবেন, ইহাতে আর আশ্চর্য কী!

পাল্টার অন্যতম বৈশিষ্ট্য: বিরোধীকে তুচ্ছ জ্ঞান করা। প্রাচীন কালে রাজানুগ্রহ লাভের ক্ষেত্রে কবির নিজস্ব কাব্যকৃতিই ছিল চূড়ান্ত। কিন্তু তরজায় শুধু কাব্যকৃতি নহে, গায়িকা যজ্ঞেশ্বরীকে জগা বা ভোলানাথকে ভোলা ময়রা বলিয়া তুচ্ছ করার ক্ষমতাই প্রধান। পার্ক স্ট্রিট, কামদুনি হইতে রায়গঞ্জ, যাদবপুর সবই যখন সাড়ে তিন বছর ধরিয়া একাদিক্রমে তুচ্ছ ঘটনার অভিধা পায়, তাহাকে আর রাজনীতি বলা যায় না। শাসকের রাজনীতিতে মতাদর্শগত আধিপত্য বিস্তারের ব্যাঞ্জনা থাকে, পাল্টা দেওয়ার তরজা সংস্কৃতি নহে। বাম জমানার অন্তিম পর্বে ‘আমরা বনাম ওরা’ বা নন্দীগ্রামকাণ্ডের পাল্টা মিছিলেও সেই আধিপত্য বিস্তারের দুর্বল রেশ ছিল। সব কিছু তুশ্চু জ্ঞান করিবার তরজা গাওয়া হইত না। নির্বিচারে ক্যাডার নামাইয়া বিরোধীদের একই মুদ্রায় শোধ দেওয়া হইত। ভ্রান্ত আদর্শ বরাবর বিরোধিতাকে চক্রান্ত বলিয়া প্রমাণ করিতে চাহে। কিন্তু তরজা-সংস্কৃতি সেই পরিশ্রমটুকুও স্বীকার করে না, বিরোধিতাকে কুৎসা বলিয়া খেউড় গানের আসর জমানোই তাহার একমাত্র লক্ষ্য।

পাল্টার এই জনসংস্কৃতিতে পাল্টি খাওয়াই রাজনীতির প্রধান চালিকাশক্তি। পাল্টানো মানে নিছক পরিবর্তন নহে, আরও কিছু। বাংলা ব্যাকরণের পরীক্ষায় নম্বর পাইবার জন্য পড়ুয়াদের বিপরীতার্থক শব্দের তালিকা মুখস্থ করিতে হয়। কিন্তু সেই তালিকায় সকল শব্দের প্রবেশ থাকে না। সব শব্দের বিপরীত হয় না। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি এবং সমাজ এই সীমার অবসান চাহিতেছে। সে মনে করে, সব কিছুর বিপরীত চাই। সে প্রশ্ন তোলে, তুমি মিছিল করিলে আমি পাল্টা দিব না কেন, তুমি সিপিএমত্ব দেখাইলে আমিই বা কেন তৃণমূলত্ব দেখাইব না। তুমি অধম হইলে আমি পাল্টা অধমতর হইব না কেন। কথা একটিই। বিদ্যাপতি, চণ্ডীদাস বা কবিকঙ্কণ মুকুন্দরামের বাংলা ভাষায় পালট বা পাল্টা শব্দটি নিছক পরিবর্তনকে বুঝায় না। তাহা এক বিশেষ পরিবর্তন: পশ্চাতে ফেরা। মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয় বাংলার এই ভাষা-সংস্কৃতি বিস্মৃত হন নাই!

Common ailment of Politicians to save themselves from trial!

উৎকণ্ঠায় বুক ধড়ফড়, মদন ফের হাসপাতালে

নিজস্ব সংবাদাতা (সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা)

কলকাতা, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, 

শ্বাসকষ্ট, অম্বল, অনিদ্রা, বুক ধড়ফড় ও পেট ফুলে যাওয়া। এই সব উপসর্গ নিয়ে শনিবার দুপুরে ফের কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন মদন মিত্র। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানান ‘প্যানিক অ্যাটাক’ হয়েছে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রীর।

তবে আপাতত তাঁর হৃদযন্ত্র একেবারে ঠিকঠাক কাজ করছে। চিকিৎসকেরা দেখেছেন, মন্ত্রীর রক্তচাপ ১৭০/৯০। নাড়ির গতি ৯০ থেকে ৯৫ এর মধ্যে। এ দিন মদনবাবুর চিকিৎসা করেন অভিজ্ঞান মাজি। তিনি বলেন, “নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছিল বলে রোগীকে অল্প অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে। হাল্কা ঘুমের ওষুধ ও গ্যাস-অম্বলের ওষুধও চলছে।” চিকিৎসকের পরামর্শ মন থেকে সব উৎকণ্ঠা-আতঙ্ক সরিয়ে রেখে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে মন্ত্রীকে।

প্যানিক অ্যাটাক রোগটা কী?

মনোচিকিৎসক মলয় ঘোষাল বলেন, “কোনও বিশেষ কারণে রোগী প্রবল আতঙ্কে ভোগেন। হাত-পা কাঁপে, বুক ধড়ফড় করে, প্রচুর ঘাম হয়। অনেকের গলা শুকিয়ে যায়, নিঃশ্বাসে কষ্ট হয়। যে কোনও সময় দম বন্ধ হয়ে যাবে রোগী এমন ভয় পেতেও শুরু করেন।” চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মতে, রোগীর মনে যে ভয় বাসা বেঁধেছে তা যে কোনও সময় বাস্তবায়িত হবে, এমন আতঙ্ক চেপে ধরে তাঁকে। সেই আতঙ্ক জন্ম দেয় প্যানিক অ্যাটাক-এর।

গত ২১ অগস্ট এই হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছিলেন মদনবাবু। সে বারেও একই উপসর্গ ছিল। কিন্তু এক মাসের মধ্যে মন্ত্রীকে কেন হাসপাতালে ভর্তি করতে হল, তা নিয়েই চিন্তিত চিকিৎসকেরা। তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েক জন বলছেন, সারদা-কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে তাঁর এক প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক বাপি করিমের। করিমকে ডেকে জেরাও করেছেন তদন্তকারীরা। মন্ত্রীর এক বর্তমান ছায়াসঙ্গী প্রশান্ত প্রামাণিকও সিবিআই জেরার মুখে পড়েছেন। সিবিআই সূত্রের খবর, তদন্তকারীদের কৌশলের কাছে হার মেনে বহু গোপন কথাই জানিয়েছেন তাঁরা। ঘনিষ্ঠদের আশঙ্কা, তার পর থেকে মদনবাবু ভীষণ মানসিক চাপে রয়েছেন। তাঁর বুক ধড়ফড় করছে, ঘুমও ছুটেছে।

চিকিৎসকদের মন্ত্রী জানিয়েছেন, এ দিন সকালেই তাঁর বুকে ব্যথা চাগাড় দেয়। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ায় সরকারি অনুষ্ঠানেও যেতে পারেননি। ক্রমশ সেই ব্যথা বাড়তে থাকায় দুপুরে নিজেই ফোন করেন ওই হাসপাতালের সিইও প্রদীপ টন্ডনকে। তার পরে তাঁকে চার তলার একটি কেবিনে চিকিৎসক সুব্রত মৈত্রের অধীনে ভর্তি করা হয়। সুব্রতবাবু তখন হাসপাতালে ছিলেন না। তাঁর দলের অন্য চিকিৎসকেরা মন্ত্রীকে পরীক্ষা করেন। টন্ডন বলেন, “আমাকে ফোন করার কিছু ক্ষণের মধ্যেই মন্ত্রী হাসপাতালে পৌঁছ যান। উনি বেশ ধীরে হাঁটাচলা করছিলেন, হাঁফাচ্ছিলেন। দুর্বল ও অসুস্থ লাগছিল ওঁকে। হুইলচেয়ারে বসিয়েই ওঁকে কেবিনে পাঠানো হয়।”

গত মাসে আট দিন হাসপাতালে ছিলেন মদনবাবু। ডাক্তাররা তাঁকে ছাড়ার কথা বললেও মন্ত্রী আরও কিছু দিন হাসপাতালে থাকতে চেয়েছিলেন। সেই আর্জি মানা হয়নি। সূত্রের খবর, মন্ত্রীর অসুখ নিয়ে সিবিআই হাসপাতালে খোঁজ নেওয়ার পরেই মদনবাবুকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তখন তাড়াতাড়ি ছাড়া হয়েছিল বলেই কি বুকের ব্যথা বাড়ল? টন্ডন বলেন, “রোগী পুরোপুরি সুস্থ না-হলে ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্ন নেই। আগের বার মন্ত্রী সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন বলেই তাঁকে ছাড়া হয়েছিল।”

Kol HC compelled police to register FIR against TMC parlamentarian

অবশেষে তাপসের বিরুদ্ধে এফআইআর

নিজস্ব সংবাদদাতা (সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা)

নাকাশিপাড়া, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, 

নাকাশিপাড়া থানায় আদালতের রায়ের প্রতিলিপি দিচ্ছেন বিপ্লব চৌধুরী। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।

প্রায় আড়াই মাস টানাপড়েনের পরে অবশেষে কৃষ্ণনগরের অভিনেতা-সাংসদ তাপস পালের বিরুদ্ধে এফআইআর করল পুলিশ।

বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে বিচারপতি নিশীথা মাত্রে জানিয়ে দেন, নদিয়ার নাকাশিপাড়ার অন্তত পাঁচটি গ্রামে তাপস পালের ‘কুরুচিকর মন্তব্যের’ বিরুদ্ধে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নাকাশিপাড়া থানাকে এফআইআর রুজু করতে হবে। তৃণমূলের ওই সাংসদের ‘কুকথা’র বিরুদ্ধে বিরাটির বাসিন্দা বিপ্লবকুমার চৌধুরী গত ২ জুলাই নাকাশিপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ, পুলিশ সেই সময় অভিযোগপত্রটিকে জেনারেল ডায়েরি বা এফআইআর কোনও ভাবেই গ্রহণ করেনি। এর পরে বিচার চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বিপ্লববাবু। মাস খানেক ধরে হাইকোর্টে এই মামলা চলে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি নিশীথা মাত্রে তাঁর ৩৯ পাতার রায়ে উল্লেখ করেছেন, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বিপ্লববাবুর দায়ের করা অভিযোগটিকে এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করতে হবে নাকাশিপাড়া থানাকে। সেই এফআইআরের ভিত্তিতে তদন্ত করার কথা সিআইডির। তবে ওই নির্দেশে সিআইডিকে হাইকোর্টের তত্ত্বাবধানে তদন্তের কথা বলা হয়নি।

হাইকোর্টের এই নির্দেশের প্রতিলিপি পৌঁছে দিতে শনিবার বেলা একটা নাগাদ নাকাশিপাড়া থানায় যান বিপ্লববাবু। তিনি থানার ওসি-র হাতে নির্দেশের প্রতিলিপি তুলে দেন। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার এত দিন গোঁ ধরে বসেছিল। শেষ পর্যন্ত সত্যের জয় হল।”

সমাজকর্মী বিপ্লববাবু এখনও পর্যন্ত ৯৮টি জনস্বার্থ মামলা করেছেন। তিনি বলেন, “এত মামলা করেছি। কিন্তু কখনও অভিযুক্তের পক্ষে রাজ্য সরকারকে এত গলা ফাটাতে দেখিনি।” অতীতে নানা ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে সিআইডির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ ক্ষেত্রে মামলার তদন্ত করার জন্য সিআইডিকে দায়িত্ব দেওয়া প্রসঙ্গে বিপ্লববাবু বলেন, “হাইকোর্টের নির্দেশ মতো সিআইডি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত না করলে সুপ্রিম কোর্টে যাব।”

রায়ের প্রতিলিপি হাতে পাওয়ার পর নাকাশিপাড়া থানার পুলিশ এ দিন বিকেলে তাপস পালের বিরুদ্ধে এফআইআর করে। বিপ্লববাবুর দায়ের করা ২ জুলাইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাপস পালের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৪ (শান্তিভঙ্গের উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃত অপমান), ৫০৫ (সংবেদনশীল বিষয়ে গোলমাল বাঁধতে পারে এমন মন্তব্য), ৫০৬ (অপরাধে উস্কানি), ৫০৯ ধারায় (কোনও মহিলার মর্যাদাহানিকর কথা, ইঙ্গিত বা কাজ) মামলা রুজু করেছে। নদিয়ার এসপি অর্ণব ঘোষ বলেন, “হাইকোর্টের রায়ের ভিত্তিতে তাপস পালের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বিপ্লব চৌধুরীর অভিযোগটিকেই এ ক্ষেত্রে এফআইআর হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।”

HOK KOLOROB - Fearless Jadavpur University Students shaken the fascist Govt of Bengal

OPINION

#Hokkolorob: Let There Be Clamour

From Jadavpur to everywhere: It must not end. It must spread.

SHUDDHABRATA SENGUPTA

More then one hundred thousand students and their friends (according to Kolkata Police estimates) defied the rain to walk in protest on September 20 against the assault on Jadavpur University by Kolkata Police, backed by an insensitive University Vice Chancellor and a cynical state government. There were students, ex students, professors, students from Presidency University, and many other colleges in Kolkata and the neighbourhood, there were many ordinary citizens, some who had never been university students, and many who had stopped being university students a long time ago.

In the past few days, there have been also been protests in solidarity, in Delhi (at JNU, Banga Bhavan and Jantar Mantar), at IIT Chennai, IIT Mumbai and IIT Kharagpur, Pondicherry, Hyderabad and in Bangalore.

[ Video Remix of Arnab' s song 'Hok Kolorob' by Samudra Kajal Saikia, from Youtube ]

The #Hokkolorob hasthag (‘Let There Be Clamour’ — ripping off a famous song by the Bangladeshi singer Arnab) spreading everywhere embodies the acrid yet fragrant air of the last few days.

Why are the students in Jadavpur, and their friends elsewhere, so angry? What makes so many young people set aside studying, parental worries, anxieties about jobs, the endless distractions of mindless entertainment, the orchestrated frenzy of consumerism to do with the coming ‘Durga Puja’, and inclement weather — to come and stand by each other? And to realize that they may be in this, together, not just for one turbulent night, or for one rainy afternoon, but for the long haul?

First of all, We need to understand that by their actions, the University Vice Chancellor and the Authorities in Government who stand by him are the primary provocation for this outburst of rage. They are squarely responsible for the mess Jadavpur University is in by actually protecting (with their inaction) those who molested and assaulted a young woman student and her friend some days ago.The Chief Minister of West Bengal has dismissed the entire episode as a ‘chhoto ghotona’ ( an insignificant event). The state’s education minister, Partha Chatterjee has actually said that—

“I won’t be responsible if members of Chhatra Parishad, professors and others who want normalcy in the education sector also launch a movement of their own. We are requesting them (students of JU) to resume the classes and not waste their academic year by this movement. They have voiced their protest and now they should go back to their classes”

—Partha Chatterjee, Trinamool Congress Leader and Education Minister, Government of West Bengal

What this means is that basically, Partha Chatterjee is threatening to unleash TMCP cadre and allied goons on to the students of Jadavpur and elsewhere in West Bengal in order to ‘restore normalcy’ in the education sector in the state. A call by the Trinamool Cchatra Parishad (Trinamool Student Council) and other Trinamool front organization for a counter-demonstration in Kolkata in support of the Vice Chancellor of Jadavpur University means that the Trinamool Congress and the Government of West Bengal actually want to raise the stakes in this confrontation.

What they do not realize is that young people today, especially in the wake of the turbulence that took hold of young people in the aftermath of the 16 December rape in Delhi, will simply not take such a provocation (and prevarication on instances of sexual assault in a university by the authorities and the police are a provocation) lying down. Had the vice chancellor and the university authorities wanted, they could have dealt with the matter with promptness, sensitivity and intelligence. Instead, to please their political masters in the Trinamool Congress Party, they tried to shield the actual reign of thuggery that they preside over in the campus of Jadavpur University. It is the Vice Chancellor, not the students, who need to understand what ‘decorum’ and ‘discipline’ in a university mean. The students, on their part, have shown restraint. Their protest has been peaceful, laden with music and humor. The onus for inaugurating violence on campus (like in June 2005, when it was the CPI(M) led Left Front Government that unleashed police on peaceful students in the dead of night) lies not with them, but with the highest authorities of the university and the state government. (see video)

Interview with Abhijit Chakrabarty, Vice Chancellor, Jadavpur University, Kolkata on News X (from Youtube)

Jadavpur University Vice Chancellor, Abhijit Chakrabarty, in an interview with News X, refused to accept the demand for his resignation. He also fantasized. His imaginative prowess, as evident in his responses in the televised interview, included statements to the effect that the students of Jadavpur University were being manipulated by Maoists, Drug Lords and a Liquor Mafia. He said that he feared for his life on the night when the students gherao’ed him. We fear for his sanity.

These incidents come in the wake of an equally unfortunate incident in Shantiniketan, in Vishwa Bharati university, where once again, a callous administration humiliated a students from Sikkim and her family, asking her to leave the campus when she complained of sexual assault. There is a pattern here. University authorities and the ruling political culture in West Bengal are simply unable to cope with young women demanding dignity and autonomy. Their first response is ‘victim shaming’, (even in Jadavpur, the ‘professors’ sent to inquire into the victim’s complaint made absolutely irrelevant and unnecessary statements about her attire and her personal life-choices. Their second response is a refusal to follow due process and their third response, when it comes to a crunch, is to call in the police and unleash violence.

This is not a question just about students or women alone. This is about the way in which people in power view those who they think they wield power over. This is the same smug arrogance that is routine in factories and offices where managements treat workers and employees with contempt. It is the same arrogance that makes patriarchs and politicians insult the autonomous choices made by young people by invoking the poison of ‘love Jihad’. It is the insults that the powerful throw at dalits, and especially young dalit women and men who are trying to carve lives of dignity with education, by wearing what they want to, by simply being ‘present’ in public space. It is the racist slur that the Delhi landlord throws at his young north-eastern tenant. Each of these instances is an offensive in war that has been unleashed on the young. On students, on young women, on young workers. It is a war on love, on pleasure, on friendship, on solidarity and on the right to lead one’s life with dignity and with freedom. And now the young are beginning to fight back.

Police Assault Students of HPU, Shimla, September 2014, Photo, Courtesy Himachal Watch

Even as we hear the news from Jadavpur, we also come to know that students peacefully protesting against (in some cases a 3000% increase) a fee hike at the Himachal Pradesh University, Summerhill, Shimla were brutally assaulted and arrested in the last few days. It is as if the Vice Chancellors of Jadavpur University and the Himachal Pradesh University were in telepathic sympathy:

“How do you deal with peaceful student protest?”
“Send in the thugs and the lathi charge”.

The students of HPU may not be as well connected, or they may or may not be as ‘in’ with using social media as their peers in Jadavpur obviously are, to spread word of what is happening to them, nor may the mainstream media be listening to their story, but they are just as deserving of our support and solidarity.

The ‘Kolorob’ or ‘Clamour’ that the students and young people of Kolkata have invoked out of the thinning air of an atmosphere marked by despondency all over the country has broken a stifling silence. This clamour needs to grow. Every corner of sullen cynicism, every pedestal of arrogant power, every new found throne and smug cushion of entitlement needs to be thrown away and torn down. Time for a new beginning, not just in Jadavpur, not just in Kolkata, everywhere.

This post on Kafila is a homage to the incredible passion, creativity, good humor and solidarity that the students of Kolkata have brought back to the city, and even to those of us who have been following them from a distance.

A song created almost instantly by Rupam Islam, in solidarity with the students, says — ‘Andoloner Shuru Aacchey, Shesh Nei’. (This movement has a beginning, it has no end).

(Kolorob Hok Kolorob — Rupam Islam)

It must not end. It must spread. Until every university, and every factory becomes a laboratory of a joyous, loving, creative renewal of learning, life, love and labour. Some might choose to call that a revolution that has no end.

I would not disagree.

---

Shuddhabrata Sengupta is an artist and writer with the Raqs Media Collective and one of the founders of Kafila where this piece first appeared

See More: The State Sponsored Terror in West Bengal

State machinery deployed to show TMC strength

Message lost in medium

OUR BUREAU (courtesy: The Telegraph)

A bevy of invisible Trinamul leaders made their presence felt at Monday afternoon’s rally in the heart of Calcutta, marshalling their troops from behind the scenes in a show of might meant to counter Saturday’s march for Jadavpur University. Many in the crowd of Trinamul supporters who walked from the Academy of Fine Arts till the Gandhi statue on the Maidan didn’t know why they were there but it didn’t seem to matter, just as it doesn’t at political rallies that bring the party faithful atop buses, trucks and vans. A group of 18 students from Jagannath Sri Bidya Niketan in Contai, 107km from Calcutta, was among the clueless faces at the rally. They had been allegedly herded into a Matador the moment they reached school in the morning. “Our teachers only told us that we would be taken to Calcutta for the day,” said a boy in blue trousers and white shirt, the school uniform. A teenaged girl from Polerhat High School in Bhangar, Trinamul strongman Arabul Islam’s turf, said she didn’t know what she was on the Maidan and not in her classroom. “I cycled for more than 30 minutes to reach school. Then two dadas and one of our teachers came to our classroom and said we would have to immediately leave for a rally in Calcutta.” Students of Bhangar Mahavidyalaya, for long Arabul’s fief, said about 70 buses and vans had been arranged to ferry them to and from the rally venue. Around 100 buses, cars and vans stood on Queensway, the road in front of Victoria Memorial, in violation of a high court ban on parking in the vicinity of the monument. Sources said youth affairs minister Aroop Biswas and urban development minister Firhad Hakim too played a role in mobilising people for the rally. “Mamata Banerjee had entrusted her nephew Abhishek Banerjee with the responsibility of making the rally successful. Aroop and Bobby (Firhad Hakim) mobilised people with Arabul’s help to ensure a large enough gathering,” a Trinamul leader said. Swapan Banerjee, chief minister Mamata Banerjee’s younger brother, and Sushanta Ghosh, member of the mayoral council, were among the few known faces in the crowd. The official purpose of the rally was to “seek justice” for the student who had been allegedly molested at Jadavpur University on August 28, triggering a chain of events that culminated in the alleged police action on the campus a week ago. “The plan was to use the organisational network of the Trinamul Chhatra Parishad, Trinamul Youth Congress and Trinamul Yuva to bring students, teachers and non-teaching staff of colleges and universities to the rally,” a source in the party said. The source said Abhishek, a first-time MP and national president of Trinamul Yuva, decided to skip the rally because he wasn’t happy with a turnout of around 12,000. Minister Aroop Biswas monitored the gathering from Nandan while colleague Firhad Hakim was stationed somewhere along Theatre Road. “Aroopda was giving instructions to some youths from his area over the phone…. He seemed nervous to hear that the gathering was thin even half an hour before the scheduled start of the march. Arabul brought a smile to his face when he arrived with around 5,000 people,” a Trinamul insider said. The motley crowd at the rally included homemakers, auto drivers and even members of syndicates active in the New Town construction belt. “It wasn’t possible to get a large crowd of college students from the nearby areas, particularly when the majority of them seem to be supporting the JU students…. We had little option but to pick whoever we could find to make up the numbers,” the Trinamul insider said. Rubi Ghorai, a homemaker from Baguiati, said: “We are associated with the local Trinamul unit. We were told last evening to join the rally; that’s why I have come.” See More : Mamta ordered a rally against Students Protest March

Poor turnout mocks the hate campaign by Mamta against JU students

Missing in action: Abhishek OUR SPECIAL CORRESPONDENT (Courtesy : THE TELEGRAPH) Abhishek Banerjee; Shanku Deb Panda, who led the rally Abhishek Banerjee, who was supposed to lead Monday’s rally, chose to stay away from the march, prompting many to ask whether the no-show was linked to the lower-than-expected turnout. Trinamul insiders said Mamata Banerjee was keen to turn Monday’s rally into a massive show of strength led by Abhishek, her nephew and Diamond Harbour MP. “Mamatadi was not happy with the turnout. She had expected more students to attend the rally. At the last moment, she decided that Abhishek attending the rally would go against the party,” said a senior leader. On Sunday night, Mamata had called a meeting with all senior leaders and asked them to marshal their resources and ensure an impressive turnout at the rally. A senior Trinamul leader said Mamata also possibly realised that public mood was building up against the government after Saturday’s apolitical rally, which was attended by 40,000 people. Abhishek’s post on his Facebook page on Sunday night set the tone for Monday’s rally. Placards with Abhishek’s message — Mod, ganja, charas bandho, tai ki pratibaader gandho (Alcohol, ganja and charas have been banned, is that the reason for the protest)? — were spotted in the rally. The absence of “Trinamul’s Rahul Gandhi”, however, remained a topic of discussion. This is not the first time that he has gone missing from action after firing the first salvo. During the recent Assembly bypolls, Mamata had fielded Abhishek to counter BJP president Amit Shah. After holding a rally in Bowbazar, Abhishek was to campaign in Basirhat, but his schedule in the North 24-Parganas constituency was cancelled amid rumours that he had taken ill. Trinamul sources said Abhishek was not fielded after his Facebook post generated widespread criticism on social networking sites and many FB users made adverse comments on the post.

See More: Anti Students rally organised by Mamta Govt. to gag students movement at 

                Jadavpur

Mamta ordered a rally against Students Protest March

Monday March vs Saturday Surge - Slogan slugfest: Hok Kolorob for one, Hok Gorjon for the other

Metro compares the rally organised by Jadavpur University students onSaturday and the one organised by Trinamul Chhatra Parishad on Monday.

The TMCP rally on Monday. (Pradip Sanyal) The students’ rally on Friday. (Amit Dutta) JU: Hok Kolorob TMC: Hok Gorjon/ Hok protirodh JU: Hok Hok Hok Kolorob TMC: Gola milie bolo shob, Bondho hok kolorob JU: Hatey hatey comrade Gore tolo barricade TMC: Dekhe ja re comrade Bhenge galo barricade Eki holo comrade Bhenge galo barricade JU: Amra sabai bohiragoto Thakbo pashe marbe joto TMC: Andoloner gopon sur Bohiragotoy bhorpur JU: Lathir mukhe gaaner sur Dekhie dilo Jadavpur TMC: Nach gaan hattali Jadavpur holo baroari JU: Lorai lorai lorai chai Lorai kore bachte chai TMC: Eksathe lorte hobe Sonar bangla gorte hobe Eksathe porte hobe Sonar bangla gorte hobe Class-e gie porte hobe Sonar bangla gorte hobe Gherao bondho korte hobe Sonar bangla gorte hobe Astro chhere porte hobe Sonar bangla gorte hobe JU: Lathir mukhe gaaner sur Poth dekhalo Jadavpur TMC: Jete hobe onekdur Dekhie debo Jadavpur Jete hobe onekdur Amra jabo Jadavpur Jete hobe onekdur Amra bachabo Jadavpur Also heard in Monday’s rally Amra sobai porte chai Gherao theke mukti chai Mao Maku-r aki sur Dekhie dilo Jadavpur Maobadi-der biruddhe Lorte hobe eksathe Nokshalider biruddhe Lorte hobe eksathe SFI-er biruddhe lorte hobe eksathe Lorte hobe eksathe Mao maku-der chamra Gutie debo amra Mod gaja bondho Jadavpure gondho Rater adhare chhilo kara Kara kara kara kara Chhatro Samir, Sujan, Asim Protibad na ghorar dim Suman, Swastika dicchhe daak Chhatro gundami swikriti paak 71 oder ferot chai Jadavpur-er kakamoshai Kole shue neshay chur Dekhie dilo Jadavpur Mod gajay poreche taan Taai akhon protibader gaan UNITED BY A CAUSE, DIVIDED BY THE LACK OF IT Monday’s protest. (Pradip Sanyal) Saturday’s protest. (Anup Bhattacharya) SIMILARITIES ROUTE: Both rallies followed the same route: Academy of Fine Arts to Gandhi statue on Mayo Road. SCHOOL STUDENTS: Both processions had hundreds of school students, but the Trinamul one had more of them. Some students were asked to join the rally when they reached school on Monday morning. DIFFERENCES HEADCOUNT  JU: About 40,000 TMC: About 12,000 WHO WALKED JU: Predominantly students from JU and other institutes, many former students of JU, several teachers and a handful of people from other walks of life, including celebrities like Suman Mukhopadhyay, Swastika Mukherjee and Anjan Dutt. TMC: Sixty per cent of them were students. The rest were school and college teachers. A large section of people were from other walks of life, from Rajarhat syndicate members to drivers. POLITICAL AFFILIATION JU: Many students who were never associated with any political group on their campus walked. TMC: All those who walked were supporters of Trinamul-affiliated units. WHY THEY CAME JU: Everyone knew the reason: to demand the VC’s resignation and a fair probe into the molestation complaint, and to protest the alleged police assault and the government’s handling of the situation. TMC: Many fumbled when asked why they were walking. One said: “The VC, who is still gheraoed, should be allowed to leave.” WHAT THEY CHANTED JU: Innovative slogans, packed with wit and humour. The ones like “Ei shotabdir duti bhul/CPM aar Trinamul” have touched those who are not supporting the JU movement but are fed up with both parties. TMC: Much better than the usual Vande Mataram or Mamata Banerjee zindabad stuff heard at Trinamul rallies. One slogan went: “Gola miliye bolo sob/bondho hok kolorob.” But there were some in bad taste: “Hok kyalano (let there be a thrashing)”. HOW THEY CAME JU: Ninety to ninety-five per cent took public transport to come to the rally. Students from a few colleges came in hired Matadors. The fact that most of the students were from Calcutta helped. TMC: Buses, SUVs and Matadors were hired. Queensway, the road in front of Victoria Memorial, was packed with parked cars and buses, in violation of a high court order. Hired vehicles were mostly for those from the fringes or districts. POLICE REACTION JU: Cops were cautious. The pavements along Mayo Road were blocked. No one was allowed to cross over to the other side. Anyone trying to leave had to come back towards Jawaharlal Nehru Road. TMC: Police seemed a little relaxed. The northern pavement of Mayo Road was open. Trinamul supporters were allowed to leave through the pavement. AFTER PROCESSION JU: A 10-member team that went to meet the governor returned after two hours and found about 2,500 protesters still sitting on Mayo Road. TMC: When Shanku Deb Panda returned about 40 minutes, he found hardly 500 rallyists on Mayo Road. See More: Anti Students rally organised by Mamta Govt. to gag students movement at Jadavpur                    The State Sponsored Terror in West Bengal