Showing posts with label crime. Show all posts
Showing posts with label crime. Show all posts

Saturday, November 22, 2014

তৃণমূল দূস্কৃতিদের তান্ডবে টেবিলের তলায় লুকোল পুলিশ


ধৃত তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ যুবক, চাঁইরা কবে, প্রশ্ন পুলিশেই

নিজস্ব সংবাদদাতা (সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা)

২১ নভেম্বর, ২০১৪


1

এই সিসিটিভি ফুটেজ দেখেই ধরা হয় অভিযুক্ত 

যোগেশ বোরাকে (ডান দিকে)। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

পুলিশের ‘সাজানো ঘটনা’ ফাঁস হয়ে গিয়েছিল আগেই। আলিপুর-কাণ্ডে আসলে কী ঘটেছিল, ধামাচাপা দিতে ভুল লোককে গ্রেফতার করে আদালতে ভর্ৎসিত হয়েছিল পুলিশ। এ বার বাহিনীর নিচুতলার চাপে পড়ে মুখরক্ষার চেষ্টা শুরু হয়ে গেল।
আলিপুর থানায় হামলার অভিযোগে বৃহস্পতিবার দুপুরে যোগেশ বোরা নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে সরকারি গাড়ি চালায়। পুলিশ জানাচ্ছে, হামলার সময়ে ঘুষি মেরে যোগেশ আলিপুর থানার জানলার কাচ ভাঙছে বলে থানার সিসি টিভি-র ফুটেজে দেখা গিয়েছে। গত শুক্রবার দুপুরে যেখানে গোলমালের সূত্রপাত, আলিপুরের সেই বিধানচন্দ্র কলোনিরই বাসিন্দা যোগেশ। স্থানীয় সূত্রের খবর, মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিমের ঘনিষ্ঠ দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল নেতা তথা বিধানচন্দ্র কলোনির সভাপতি প্রতাপ সাহার ‘কাছের লোক’ এই যোগেশ।
প্রতাপ সাহা কিংবা তাঁর ডান হাত মনোজকে পুলিশ এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি। ধরতে পারেনি থানায় হামলা চালানো আইনজীবীর পোশাক পরা তৃণমূলের এক নেত্রীকেও। তবে আলিপুর থানার নিচুতলা বলছে, যোগেশকে গ্রেফতার করায় হামলার ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের যোগাযোগ পরিষ্কার হয়ে গেল। কিন্তু প্রতাপ সাহা এবং তাঁর দুই ঘনিষ্ঠকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না? পুলিশের দাবি, হামলার সময়ে প্রতাপ থানায় ছিলেন না। সিসি টিভি ফুটেজে তাঁকে দেখা যায়নি। অন্য কেউই নিজেদের বাড়িতে থাকছেন না। সিসি টিভি-র ফুটেজে উপস্থিত আইনজীবীর পোশাক পরা এক মহিলা ও দশাসই যুবকের ফোন কিন্তু এখনও খোলা রয়েছে। আজ, শুক্রবার ধৃত যোগেশকে আদালতে পেশ করার কথা। পুলিশ জানাচ্ছে, সেই সঙ্গে অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত ১৪-১৫ জনের কথা আদালতে জানানো হবে। সিসি টিভি-র ফুটেজ ঘেঁটে চিহ্নিত আরও পাঁচ জনের ছবিও বিচারকের কাছে জমা দেওয়া হবে। (আরও....)


আলিপুর কাণ্ড

ববি-ঘনিষ্ঠকেই কেন থানা হামলার তদন্তভার

নিজস্ব সংবাদদাতা (সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা)

১৮ নভেম্বর, ২০১৪

দু’জনে ‘গুরু-ভাই’। এক গুরু-ভাইয়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত অন্য গুরু-ভাই কী ভাবে করবেন, তা নিয়ে তোলপাড় কলকাতা পুলিশের নিচুতলা।
এক জন আলিপুরের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা প্রতাপ সাহা। অন্য জন আলিপুর থানার ওসি বুদ্ধদেব কুণ্ডু। প্রথম জন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিমের ঘনিষ্ঠ বলে এলাকায় পরিচিত। আর দ্বিতীয় জন পুলিশ মহলে। ১৪ নভেম্বর আলিপুর থানায় তাণ্ডব চালান স্থানীয় বিধানচন্দ্র রায় কলোনির বাসিন্দারা। সেই কলোনি কমিটির সভাপতি প্রতাপ। তাঁর বিরুদ্ধে সে দিন অভিযোগ লেখা না হলেও ওই দিন থানায় উপস্থিতি পুলিশের নিচুতলা জানাচ্ছে, ঘটনার পিছনে প্রতাপেরই উস্কানি রয়েছে। তা হলে এমন গুরু-ভাইয়ের বিরুদ্ধে কী ভাবে তদন্ত করবেন বুদ্ধদেববাবু?
আলিপুর কাণ্ডের পর পুলিশমহলে কয়েকটি ঘটনা পরম্পরায় এই প্রশ্ন আরও উঠছে। হামলা হয় গত শুক্রবার। পরদিনই লালবাজারে পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থ পদস্থ অফিসারদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকে জানতে চান, কী করণীয়। লালবাজার সূত্রের খবর, এক আইপিএস অফিসার স্পষ্ট বলেন, “ওসি-র অপদার্থতার জন্যই এত বড় কাণ্ড ঘটে গিয়েছে। তিনি পরিস্থিতি সামলাতে পারেননি।” বেশ কয়েক জন আইপিএস-ও তাঁকে সমর্থন করেন।
সোমবার পর্যন্ত ওসি-র কাছে কোনও ব্যাখ্যা তো তলব করেইনি লালবাজার, উল্টে তাঁকেই এই ঘটনা তদন্ত সামলাতে বলা হয়েছে! (আরও....)


সম্পাদকীয় ১ (সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা)
আজব (নৈ)রাজ্য
২০ নভেম্বর, ২০১৪, ০০:০৫:০২

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গকে রাজ্য না বলিয়া মূর্তিমান নৈরাজ্য বলাই যুক্তিযুক্ত। আজব নৈরাজ্য। এখানে ধর্ষণকে ‘সাজানো ঘটনা’ আখ্যা দিয়া ধর্ষিতাকে দিব্য অপমান করা হয়। অথচ যাঁহারা সেই অপকর্মটি করেন, তাঁহাদের আচরণ দেখিয়া মনে হয়, তাঁহারা নিয়মিত ঘটনা সাজাইবার কাজেই লিপ্ত। আলিপুরের পুলিশি কুনাট্যকে তেমনই এক সাজানো ঘটনা বলিয়া মনে করিবার প্রভূত কারণ এবং যুক্তি রহিয়াছে। অভিযোগ, থানায় হামলাকারী শাসক-আশ্রিত সমাজবিরোধীদের আড়াল করিতে দশ-পনেরো কিলোমিটার দূর হইতে কিছু গোবেচারা নিরীহ মানুষকে ধরিয়া আনিয়া আদালতে পেশ করা হইয়াছে, তাহার আগে আদালতে মুখ খুলিলে আরও গুরুতর অভিযোগে ফাঁসাইয়া দিবার হুমকি দেওয়া হইয়াছে। বিচারপতিরা ধৃতদের বিরুদ্ধে গ্রহণযোগ্য সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে তাহাদের পত্রপাঠ ছাড়িয়া দিলে এই অভিযোগের গুরুত্ব অনুমান করিতে অসুবিধা হয় না। অভিযোগ, থানায় হামলাকারী দলীয় দুষ্কৃৃতীরা থানায় বসিয়াই দারোগার সহিত শলা করিয়া এই কুনাট্যের মহড়া সাজাইয়াছেন, তাঁহারা ক্ষমতাবান ও স্নেহধন্য মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তাঁহাদের কেশাগ্র স্পর্শ করা যায় নাই। থানার ভিতরে ফাইলকে ঢাল করিয়া টেবিলের তলায় আত্মরক্ষা করিতে পুলিশের তত্‌পরতা ও অতঃপর এই বিচিত্র ‘তদন্ত’ ও ধরপাকড়ের কাহিনির জন্য পুলিশমন্ত্রী স্বর্ণপদক দাবি করিতে পারেন।
এত কাল রাজ্যের জেলায় জেলায় ‘আমরা’র পালন এবং ‘ওরা’র দমন চলিয়া আসিতেছে। দলীয় দুর্বৃত্তদের যথেচ্ছাচার জনসাধারণকে অতিষ্ঠ করিতেছে। খুনি হউক বা ধর্ষক, অভিযুক্ত শাসক দলের হইলে পুলিশ তাহাদের বিরুদ্ধে অভিযোগই লইবে না, প্রশাসনের উচ্চ স্তর হইতে ফাঁড়ি অবধি দুষ্কৃতীদের না-ধরার, বরং অভিযোগকারীদেরই ভুয়া মামলায় জড়াইয়া হেনস্থাকরার, কখনও সালিশি সভার আয়োজন করিয়া মিটমাট করিয়া লওয়ার নিদান আসিতেছে। বিরোধী দলের সমর্থকদের বিরুদ্ধে শাসক দলের মাস্কেট বাহিনীর অভিযান পুলিশি প্রহরা ও ১৪৪ ধারার মধ্যেই সংঘটিত হইতেছে। আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধারের নামে বিরোধী-অধ্যুষিত গ্রামগুলিতে হানা দিয়া ধরপাকড় ও নির্যাতনও শুরু হইয়াছে, শাসক দলের সমর্থকদের ঘাঁটিগুলিকে নিশ্চিন্তে আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করার সুযোগ দিয়া। আবার জেহাদি সন্ত্রাসবাদীদের মৌলবাদ ও সশস্ত্র প্রশিক্ষণের ঘাঁটিগুলিও পুলিশের উদাসীন প্রশ্রয়েই রাজ্যের নানা জেলায় শিকড় বিস্তার করিয়াছে। সমগ্র পরিস্থিতি শীর্ষ শাসক রাজনীতিকদের গোচরেই হইতেছে। আইনের শাসন বলিয়া কিছু আর অবশিষ্ট নাই। কারণ যাঁহারা আইনরক্ষক, শাসকাশ্রিত দুষ্কৃতীদের দ্বারা আক্রান্ত এমনকী নিহত হইলেও তাহাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণের স্বাধীনতা তাঁহাদের নাই। সুশাসনের শর্ত পদে পদে লঙ্ঘিত হইতেছে। আদালতের ক্রমাগত তিরস্কার জানাইয়া দেয়, পশ্চিমবঙ্গ কার্যত গোল্লায় গিয়াছে।
আলিপুরের মতো রাজধানী শহরের প্রাণকেন্দ্রে ভয়াবহ কুনাট্য বলিয়া দিতেছে, এখানে অন্যায়ের প্রতিবিধানের কোনও সম্ভাবনা নাই। নিরঙ্কুশ রাজনৈতিক আধিপত্য সত্ত্বেও একটি শাসক দল যে এ ভাবে স্বেচ্ছাচারী হইতে পারে, ভাবা কঠিন। ইহাকে বর্গির রাজত্ব বলিলে ভুল হয়। মরাঠা বর্গিরা সুদূর ভিনরাজ্য হইতে লুণ্ঠনের জন্য আসিয়া বাংলায় যে অরাজকতা সৃষ্টি করিয়াছিল, স্বভূমিতেই দুর্বৃত্তদের রাজনীতিতে অভিষিক্ত করিয়া তৃণমূল কংগ্রেস সেই অনাচার ও মাত্‌স্যন্যায়, সেই ভয় ও ত্রাসের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করিয়া ফেলিয়াছে। হার্মাদরা এখন আর নেতাদের আজ্ঞাবহ যন্ত্র নয়, এখন হার্মাদরাই যন্ত্রীর ভূমিকায়। তাই দুর্বৃত্তরা পশ্চিমবঙ্গে আর পুলিশকে ভয় পায় না, বরং উচ্চাসনের বরাভয়পুষ্ট দুষ্কৃতীদেরই পুলিশ ভয় করিয়া, সমীহ করিয়া চলে। সন্ত্রস্ত সাধারণ মানুষের অবস্থা অনুমেয়।



আলিপুর মামলা

কোর্টে তিরস্কারের তোড়ে ভুল কবুল পুলিশের

নিজস্ব সংবাদদাতা

২২ নভেম্বর, ২০১৪

থানা থেকে আদালত, সর্বত্র পুলিশের লেজে-গোবরে দশা অব্যাহত! তদন্তের নামে আলিপুরের ‘সাজানো ঘটনা’ ফাঁস হয়ে যাওয়ায় আদালতের তোপের মুখে পড়তে হয়েছিল তাদের। এ বার ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ বা ভাবমূর্তির ক্ষত মেরামতিতে নেমেও পুরনো পাপের জন্য বিচারকের কাছে পুলিশকে ফের ভর্ৎসিত হতে হল। তিরস্কারের তোড়ের মুখে সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল স্বীকার করতে বাধ্য হন যে, পুলিশের ভুল হয়েছিল।

আলিপুর থানায় ঠিক এক সপ্তাহ আগেকার তাণ্ডবের ঘটনায় ধৃত যোগেশ বোরাকে শুক্রবার চার দিনের জন্য পুলিশি হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আলিপুর আদালতের মুখ্য বিচারক সঞ্জীব দারুকা। তবে তার আগে কৃতকর্মের জন্য ফের পুলিশের কড়া সমালোচনা করেন তিনি। গত মঙ্গলবার পাঁচ জনকে ধরে আনলেও আলিপুরের ঘটনায় তাদের জড়িত থাকার কোনও তথ্যপ্রমাণ আদালতে পেশ করতে পারেনি পুলিশ। পাঁচ জনকেই জামিনে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। পুলিশের কাছে না ছিল ধৃতদের বিবৃতির কোনও নথি, না ছিল সিসিটিভি-র ফুটেজ। তদন্তের এই দৈন্যদশার জন্য বিচারক এ দিনও পুলিশকে তিরস্কার করেন। (আরও....)

Saturday, November 1, 2014

West Bengal Police - became partisan and inept under Mamta Administration!


সন্তোষপুর

আক্রান্ত পুলিশ, অভিযুক্ত শাসক দলের কাউন্সিলর

নিজস্ব সংবাদদাতা (সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা)

২৯ অক্টোবর, ২০১৪,


3

সেই সার্জেন্ট সুকান্ত মুহুরি।

এ বার খাস কলকাতাতেই আক্রান্ত হল পুলিশ। এক দিনের ব্যবধানে কর্তব্য পালন করতে গিয়ে শহরে দু’বার আক্রমণের মুখে পড়তে হল তাদের। মঙ্গলবার দুপুরে যাদবপুরের সন্তোষপুরে এবং রবিবার রাতে লেক এলাকার গোবিন্দপুর কলোনিতে এই দু’টি ঘটনায় মোট চার জন পুলিশকর্মী জখম হন। সন্তোষপুরের ঘটনায় পুলিশের উপরে হামলায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক তৃণমূলের কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, কর্তব্যরত এক সার্জেন্টের সঙ্গে বচসার জেরে তাঁর উপর চড়াও হন তিনি।
সন্তোষপুরের লেকপল্লিতে ঘটনার সূত্রপাত এক ট্যাক্সিচালককে ‘কেস’ দেওয়াকে কেন্দ্র করে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর একটা নাগাদ এক ট্যাক্সিচালক সন্তোষপুরের রাস্তায় নো-পার্কিং জোনে ট্যাক্সি দাঁড় করালে কর্তব্যরত সার্জেন্ট মানবেন্দ্র বিশ্বাস তাঁকে ‘কেস’ দিতে যান। ট্যাক্সিচালক তখন ওই সার্জেন্টকে কোনও ‘কেস’ না দিয়ে ‘স্পট ফাইন’ করার অনুরোধ করেন। অনুরোধ মেনে তাঁকে জরিমানা করেন সার্জেন্ট।
পুলিশের একাংশের অভিযোগ, ওই সময়ে ঘটনাস্থলের কাছেই ছিলেন ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সঞ্জয় দাস। ট্যাক্সিচালককে কেস দেওয়া নিয়ে মানবেন্দ্রবাবুর সঙ্গে বচসা বাধে তাঁর। মানবেন্দ্রবাবুর সঙ্গী আর এক সার্জেন্ট সুকান্ত মুহুরি সেই সময়ে মোবাইলে ওই বচসার ছবি তুলতে গেলে সঞ্জয়বাবু ও তাঁর সহযোগীরা মোবাইল কেড়ে নিয়ে তাঁর উপরে চড়াও হন বলে অভিযোগ। তখনই ধাক্কাধাক্কিতে মাটিতে পড়ে যান সুকান্তবাবু। পুলিশ সূত্রে খবর, সুকান্তবাবুকে বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর বুকে এবং মাথায় চোট লেগেছে বলে চিকিৎসকেরা পুলিশকে জানিয়েছেন। যদিও বিষয়টি নিয়ে ওই দুই সার্জেন্টের কেউই সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে রাজি হননি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতে সার্ভে পার্ক থানায় ওই কাউন্সিলর এবং তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন মানবেন্দ্রবাবু। তার ভিত্তিতে সরকারি কর্মীর কাজে বাধাদান, তাঁর উপরে হামলা চালানো, হুমকি দেওয়া এবং ভয় দেখানোর মামলা রুজু করেছে পুলিশ। রাতে লালবাজারের এক কর্তা বলেন, “ওই সার্জেন্টের অভিযোগের ভিত্তিতে কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্তও শুরু হয়েছে।” তবে পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনার কথা প্রথমে চেপে যাওয়া হয়েছিল। ঘটনার ছ’ঘণ্টারও বেশি সময় পরে এ নিয়ে এফআইআর দায়ের করা হয়।
তবে বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত কাউন্সিলর সঞ্জয়বাবুর সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর মোবাইল বেজে যায়। এসএমএসেরও জবাব মেলেনি।
অন্য দিকে, রবিবার রাতে কালীপ্রতিমা বিসর্জনের সময়ে বাজি ফাটানো নিয়ে দুই ক্লাবের সংঘর্ষ হয়। তা আটকাতে গিয়ে মার খায় পুলিশ। পুলিশের অভিযোগ, তাদের লক্ষ করে ইট, পাথর, বাজি ছোড়া হয়। এতে জখম হন তিন পুলিশকর্মী। ঘটনাটি ঘটেছে লেক থানার গোবিন্দপুর লেনে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই রাতে বিসর্জন সেরে এলাকায় ফিরছিলেন স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যেরা। মাঝরাস্তায় যোধপুর পার্কের একটি ক্লাবের শোভাযাত্রার মুখোমুখি হন তাঁরা। পুলিশ জানায়, যোধপুর পার্কের ওই ক্লাবটির সদস্যেরা অন্য ক্লাবটির সদস্যদের লক্ষ করে বাজি ছোড়ে। এর জেরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় লেক থানার চার পুলিশকর্মীর একটি দল। পুলিশ জানিয়েছে, সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে পুলিশকে লক্ষ করেও ইট, পাথর, বাজি ছোড়া হয়। ঘটনায় তিন পুলিশকর্মী জখম হন। এই ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি বলে জানায় পুলিশ।




পুলিশ নিগ্রহ: কেউ সাজা পায় কেউ পায় না

নিজস্ব সংবাদদাতা (সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা)

৩০ অক্টোবর, ২০১৪,

একই আইন এবং একই অভিযোগ। অথচ, দুই ক্ষেত্রে আইনের পৃথক ফল।
মঙ্গলবার সকালে সার্ভে পার্কে এক তৃণমূল কাউন্সিলরের নেতৃত্বে আক্রান্ত হয়েছিলেন কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্ট। সার্ভে পার্কের ঘটনায় রাতে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হলেও বুধবার রাত পর্যন্ত অভিযুক্ত ওই কাউন্সিলরকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। আইনের ভিন্নতা দেখা গেল এই ঘটনার ১১ ঘণ্টা পরে। পুলিশ জানিয়েছে, একই দিনে রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ দুই পুলিশকর্মীকে মারধর করেন এক ব্যক্তি। আর এই ঘটনার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। ধৃতের নাম নিরঞ্জন চৌধুরী। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সময়ে মত্ত অবস্থায় ছিলেন তিনি।
কিন্তু একই ধরনের ঘটনায় ভিন্ন আইন কেন? এই নিয়ে বুধবার যুগ্ম কমিশনার (সদর) রাজীব মিশ্রকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “ফৌজদারি আইনে সব সময়ে গ্রেফতার বাধ্যতামূলক নয়। ঘটনার পরিস্থিতি বিচার করে গ্রেফতার করা হয়। এই ক্ষেত্রে তদন্ত চলছে।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুর একটা নাগাদ নিয়ম ভাঙার অভিযোগে এক ট্যাক্সিচালককে ‘কেস’ দিতে গিয়ে আক্রান্ত হন পূর্ব যাদবপুর ট্রাফিক গার্ডের এক সার্জেন্ট। সন্তোষপুর এলাকার লেকপল্লিতে ঘটনাটি ঘটে। পুলিশের উপরে আক্রমণের সময়ে ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সঞ্জয় দাস নেতৃত্ব দেন বলেও অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় সার্জেন্ট সুকান্ত মুহুরি জখম হন। তাঁর বাইক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মানবেন্দ্র বিশ্বাস নামে আর এক সার্জেন্টের মোবাইল ফোনটি ভেঙে ফেলারও চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। প্রথমে বিষয়টি নিয়ে পুলিশ মহলে কেউ কিছু বলতে না চাইলেও পরে রাতের দিকে তৃণমূল কাউন্সিলর সঞ্জয় দাসের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। অথচ সেই ঘটনায় এখনও অভিযুক্ত কাউন্সিলরকে গ্রেফতার করা হয়নি।
কী ঘটেছে হরিদেবপুরে? পুলিশ জানায়, ওই রাতে নিরঞ্জনবাবু হরিদেবপুর থানার এক কনস্টেবলের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলে আসেন আরএফএসের কয়েক জন কর্তব্যরত পুলিশকর্মী। মত্ত অবস্থার নিরঞ্জনবাবুর সঙ্গে তাঁরাও বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
পুলিশ জানিয়েছে, এর পরেই মত্ত ওই ব্যক্তি আচমকা তাঁদের মারধর করতে শুরু করেন। ঘটনায় দুই পুলিশকর্মী অল্পবিস্তর জখম হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পরেই পুলিশকে মারধরের অভিযোগে নিরঞ্জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, দু’টি ঘটনাতেই কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিশের উপরে হামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৩৫৩ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে হুমকি (৫০৬), ৫০ টাকা মূল্যের বেশি সম্পত্তি ধ্বংস (৪২৭) এবং সমবেত হামলার (৩৪) ধারাগুলি। পুলিশ জানিয়েছে, আইনের অন্য ধারাগুলি জামিনযোগ্য অপরাধ হলেও ৩৫৩ ধারাটি জামিন-অযোগ্য। এই ধারায় অভিযুক্তের দুই বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা দু’টো সাজাই হতে পারে। অথচ অভিযোগ, অভিযুক্ত ওই তৃণমূল কাউন্সিলরকে গ্রেফতার তো দূর অস্ত্‌, জিজ্ঞাসাবাদ পর্যন্ত করা হয়নি। দুই ক্ষেত্রে দু’রকমের ব্যবস্থা নেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। পুলিশের একাংশের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত এক জন তৃণমূল কাউন্সিলর হওয়ার কারণেই এমন ঘটেছে। তাঁকে গ্রেফতার করতে হলে উপরমহল থেকে অনুমতির প্রয়োজন।



        

"Miscarriage pf Justice" by Mamta administration - Arrested a person who is already in Police custody, Court lambasted!


Saturday , November 1 , 2014











Court slams West Bengal police for abuse of power in investigation of Birbhum clashes



Sougata Mukhopadhyay,CNN.com
Oct 31, 2014 at 03:01pm IST Kolkata: Siuri court severely reprimanded West Bengal Police and directed top brass of district police to remove the officer in charge of Parui PS Kartick Mohan Ghosh and suspend Investigation Officer in the Parui political clash case Dhrubajyoti Dutta for dereliction of duty.

Siuri court severely reprimanded West Bengal Police and directed top brass of district police to remove the officer in charge of Parui PS Kartick Mohan Ghosh and suspend Investigation Officer in the Parui political clash case Dhrubajyoti Dutta for dereliction of duty.
The court referred the case to Calcutta High Court for further action, also directed the district police to set up a high-level inquiry committee headed by a DSP against the accused officers.
The Parui police produced an accused, Ali Jinnah, twice before the court and showed him as accused in two different cases and even prayed for his remand.
The accused, a TMC supporter, was first arrested on Tuesday on the basis of an FIR lodged at the Parui PS on the clash between TMC and BJP in Makra village on Monday. The court remanded the accused in police custody for five days along with 10 other accused who were also arrested
The same person was again produced in court by the police on Thursday and was shown as an accused in a suo motu case lodged by the police on the Makra clash and again prayed for his remand
A disgusted chief judicial magistrate of Birbhum, Indranil Chatterjee, summoned the OC to the court and asked him how can he ask for remand of an accused who his already in his remand.
The OC said to court that this was a "mistake" and asked for the court's pardon. The judge observed that a "mistake" is when you write two plus two as six, but if you write two plus two as Shakespeare, then that cannot be called a "mistake", it's an abuse of power.
The disciplinary action on the accused officers was given by the court on Friday after the follow up hearing in this case.


***************
১৫ কার্তিক ১৪২১ শনিবার ১ নভেম্বর ২০১৪ | কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ



বিচারের গর্ভপাত! পুলিশকে তোপ ক্ষুব্ধ বিচারকের

দয়াল সেনগুপ্ত


সিউড়ি, ১ নভেম্বর, ২০১৪, ০৩:৩৫:৪৭


3
সিউড়ি আদালত থেকে বেরোচ্ছেন পাড়ুই থানার ওসি কার্তিকমোহন ঘোষ।—নিজস্ব চিত্র।


বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, ‘মিসইউজ অব পাওয়ার’ অর্থাৎ, ক্ষমতার অপব্যবহার। শুক্রবার আরও কঠোর ভাষায় বললেন, ‘মিসক্যারেজ অব জাস্টিস’ (বিচারের গর্ভপাত)!
বললেন, বীরভূমের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট বা সিজেএম ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায়। শুনলেন, জেলা পুলিশের ডিএসপি (শৃঙ্খলা ও প্রশিক্ষণ) সুমিত চট্টোপাধ্যায়। মাখড়া-কাণ্ডে ধৃত আলি জিন্নাকে নিয়ে পরপর দু’দিন জেলা পুলিশকে এ ভাবেই তুলোধোনা করলেন সিজেএম। পাড়ুই থানার ওসিকে সরিয়ে দেওয়া, তদন্তকারী অফিসারকে মাখড়ার তদন্ত থেকে সরিয়ে দেওয়া-সহ একাধিক সুপারিশও করলেন বিচারক। এমনকী, পুলিশের ‘ভুলে’র সত্যতা খতিয়ে দেখতে ডিএসপি পদমর্যাদার কোনও অফিসারকে দিয়ে তদন্ত করানোর নির্দেশও দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি বিচারক জানিয়েছেন, বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্টে ‘রেফার’ (গোচরে) করা হচ্ছে। নির্দেশ দিতে গিয়ে বিচারকের মন্তব্য, “যদি আদালত নরম মনোভাব দেখায়, তা হলে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। যে কেউ ভাবতে পারেন, কোনও অন্যায় করে শুধু ‘ভুল হয়ে গিয়েছে’ বলে পার পাওয়া যায়। সেটা ঠিক হবে না। তাই বীরভূমের পুলিশের সুপারের কাছে সুপারিশগুলি করছি।”
এ দিনই গণধর্ষণের এক মামলায় একাধিক বার আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় নদিয়ার নাকাশিপাড়ার ওসি রাজা সরকারকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেয় কৃষ্ণনগর আদালত। পরে অবশ্য জামিন পান।
মাখড়া-কাণ্ডে জড়িত অভিযোগে মঙ্গলবার রাতে জিন্নাকে গ্রেফতার করেছিল পাড়ুই থানার ওসি। বুধবার তাকে পুলিশি হেফাজতে রাখতে বলেন সিজেএম। বৃহস্পতিবার ফের জিন্নাকেই গ্রেফতার দেখিয়ে সিজেএমের এজলাসে তুলে হেফাজতের আবেদন জানায় পুলিশ। আর তাতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিচারক। ওসি ও অ্যারেস্টিং অফিসারকে এজলাসে ডেকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন। পুলিশের দাবি ছিল, ‘ভুল’ করে এই কাণ্ড ঘটেছে। ঘটনার লিখিত ব্যাখ্যা-সমেত শুক্রবার আদালতে পুলিশ সুপার, ওসি এবং তদন্তকারী অফিসারকে হাজির থাকার নির্দেশ দেন বিচারক।
এ দিন বেলা ১১টায় ডিএসপি সুমিতবাবু এজলাসে এসে পৌঁছন। দশ মিনিট পরেই চলে আসেন পাড়ুই থানার ওসি কার্তিকমোহন ঘোষ, জিন্নার অ্যারেস্টিং অফিসার ধ্রুবজ্যোতি দত্ত ও তদন্তকারী অফিসার গোপালচন্দ্র চন্দ্র। বেলা ১১টা ২০ মিনিটে ওঠে মামলা। সুমিতবাবু বিচারককে জানান, মায়ের পারলৌকিক কাজের জন্য এসপি ছুটিতে থাকায় তিনি এসেছেন।
বিচারক (ডিএসপি-র উদ্দেশে): আপনি ঘটনার কথা জানেন তো?
ডিএসপি: আদালতের আদেশনামা পেয়ে জানতে পেরেছি।
বিচারক: পুলিশ রিমান্ডের জন্য ফরোয়ার্ড আপনিই করেছিলেন তো?
ডিএসপি: হ্যাঁ।
বিচারক: আর আগেরটা? (জিন্নাকে হেফাজতে চেয়ে বুধবারের আবেদন)
ডিএসপি: ওটা আমি করিনি।
লিখিত ব্যাখ্যা এনেছেন কি না ওসি-র কাছে জেনে নেন বিচারক। কাঠগড়ায় ওঠেন অ্যারেস্টিং অফিসার ধ্রুবজ্যোতি দত্ত (যিনি বুধবার জিন্নাকে তার বাড়ি থেকেই ধরেছেন বলে দাবি করে বৃহস্পতিবার কোর্টে তুলেছেন)
বিচারক: আমাকে বলুন তো, পুলিশি হেফাজতে থাকা এক জন আসামিকে আপনি দৌড়োদৌড়ি করে ধরলেন কী ভাবে?
আইও: স্যার, মিস্টেক হয়েছে।
বিচারক: অন্য শব্দ বাছুন। আগেও আপনাকে বলেছি, এটা ভুল নয়। (ডিএসপি-র দিকে তাকিয়ে) ঘটনার ভিত্তিতে আপনারা কি কোনও বিভাগীয় পদক্ষেপ করেছেন?
ডিএসপি: স্যার, এসপি সাহেব জানিয়েছেন আদালতে কী হচ্ছে, ছুটি থেকে ফিরে সেই নির্দেশ দেখবেন। আদালত নির্দিষ্ট পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিলে উনি ব্যবস্থা নেবেন।
বিচারক: (ওসি-কে) আপনি কী ব্যবস্থা নিয়েছেন?
ওসি: আইও এবং অ্যারেস্টিং অফিসারের বিরুদ্ধে রিপোর্ট দিচ্ছি।
(এর পরেই বিচারক পুলিশের ভুলের ব্যাখ্যা চান)
বিচারক: নিজেদের হেফাজতে থাকা এক ব্যক্তিকে ফের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করার কথা বলছিল পুলিশ। সেটার কী ব্যাখ্যা?
সরকারি আইনজীবী: আসলে ওই থানায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। পুলিশকর্মীরা খুব চাপে আছেন। সেই জন্য এমন ভুল হয়ে গিয়েছে।
বিচারক: এটা হয় নাকি! ধরুন, আপনি এখানে রয়েছেন। কেউ যদি বলে আপনাকে মুম্বইয়ে দেখা গিয়েছে, সেটা কি সম্ভব?
সরকারি আইনজীবী: (বিব্রত হয়ে) সত্যিই এর কোনও গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা নেই।
এর পরেই জিন্নার জামিনের পক্ষে সওয়াল করেন অভিযুক্তের আইনজীবী মলয় মুখোপাধ্যায় (তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি)। বিচারক চট্টোপাধ্যায় জিন্নাকে ফের তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। সব শেষে বিচারক পুলিশ সুপারের উদ্দেশে সুপারিশগুলি দেন। কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ভগবতীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশ আদালতের সঙ্গে প্রতারণা করেছিল। তাই আদালত ঠিকই নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের এই এক্তিয়ার রয়েছে।” আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্যের মত, “আইনের শাসন বজায় রাখতে এই নির্দেশ সঙ্গত।”
এ দিন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দেখা করে পাড়ুই-প্রসঙ্গ তোলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। তিনি বলেন, “রাজ্যপালকে আমরা বলেছি, আপনার সরকার (যে হেতু আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজ্য সরকারকে ‘আমার সরকার’ বলেই উল্লেখ করতে হয় রাজ্যপালকে) প্রায় প্রতি দিন আদালতে ভর্ৎসিত হচ্ছে। প্রশাসনের উপরে সাধারণ মানুষের আর আস্থা নেই। আদালতের কাছে তাঁদের    বিচার চাইতে যেতে হচ্ছে এবং আদালতকেও হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে। এটা গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক।” রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে একই সুরে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেছেন, “পুলিশের অবস্থা তো আদালতের বক্তব্য থেকেই পরিষ্কার। আর যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিজের পুলিশের উপরে আস্থা নেই, তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকেন কী করে?”


হেফাজতে থাকা অভিযুক্তকে ফের গ্রেফতার দেখানোর জের, পাড়ুই থানার ওসিকে সরানোর অনুরোধ আদালতের, সাসপেন্ডের সুপারিশ আইও-কে


পুলিশের হেফাজতে থাকা অভিযুক্তকে ফের গ্রেফতার দেখানোর জের। পাড়ুই থানার ওসিকে সরিয়ে দিতে পুলিশ সুপারকে অনুরোধ সিউড়ি আদালতের। সাসপেন্ড করার সুপারিশ এক তদন্তকারী অফিসারকে। গতকালই পাড়ুই থানার ওসিকে তলব করে তিরস্কার করেন বিচারক।
শুনানির শুরুতেই এদিনও পাড়ুই থানা ওসি এবং তদন্তকারী অফিসারকে তীব্র ভর্ত্সনা করেন বিচারক। তিনি বলেন, সামগ্রিক পরিস্থিতি খুব দুর্ভাগ্যজনক. শুধু অভিযুক্তর জন্য নয়, আদালতের জন্যও। এই পরিস্থিতি তৈরি হল পুলিশ অফিসারদের চূড়ান্ত অকর্মণ্যতার জন্য। এই ঘটনা তদন্তকারী অফিসারের চূড়ান্ত স্বৈরাচারী মনোভাবের পরিচয়। সে কাজে সমর্থন ছিল ওসির। এবং একজন ডিএসপি দ্বিতীয় দফার হেফাজত চাওয়ার আবেদন আদালতে পাঠিয়েছেন।
তদন্তকারী অফিসারেরও কড়া সমালোচনা করে বিচারক বলেন, শুধু মন্তব্য করে বা সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়াটা সম্ভব নয়। যদি আদালত এক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে ভুল বার্তা যাবে। পরবর্তী সময়ে এধরনের কাজ করে সবাই ‘ভুল হয়ে গিয়েছে’ বলে পার পেয়ে যাবে।
এটা স্পষ্ট, তদন্তকারী অফিসার ধ্রুবজ্যোতি দত্ত আলি জিন্নাকে পাড়ুই থানার পুলিশ লকআপ থেকে বের করে ১৫২ নম্বর মামলার অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পেশ করেছেন। অথচ আদালতের রেকর্ডে দেখানো হয়, আলি জিন্নাকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তকারী অফিসার মিথ্যা বিবৃতি দিয়েছেন এবং পুরো ঘটনাক্রমকে ভুলভাবে দেখিয়েছেন। আদালত এই মামলাটি হাইকোর্টের নজরে নিয়ে আসবে। আদালত তদন্তকারী অফিসারকে সরাসরি সাসপেন্ড করার সুপারিশ করছে।
পুলিশ সুপারকে অনুরোধ করছি, এই কথা ভেবে দেখতে, তার পুলিশ বাহিনীকে কোন অফিসাররা কাজ করছেন, এবং তাঁরা আদৌ কাজ করার যোগ্য কিনা।
এরপর পাড়ুই থানার ওসিকে তীব্র ভর্ত্সনা করে বিচারক মন্তব্য করেন, অফিসারের দেওয়া নথিতে অন্ধের মতো সই করেছেন ওসি। সেসময় ওসি ঘুমোচ্ছিলেন কিনা, আমরা বুঝতে পারছি না। আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। যখন তদন্তকারী অফিসার আলি জিন্নাকে লক আপ থেকে বের করছেন, তখনও ওসি বুঝতে পারলেন না কী হচ্ছে! আদালত সুপারিশ করছে, ওসির ভূমিকা খতিয়ে দেখতে পুলিশ সুপার বিভাগীয় তদন্ত করুন। ন্যূনতম ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসারকে দিয়ে বিভাগীয় তদন্ত করানো হোক। আদালত পুলিশ সুপারকে অনুরোধ করছে, কার্তিকমোহন ঘোষকে যত দ্রুত সম্ভব ওসির পদ থেকে সরানোর জন্য।
সরকারি আইনজীবীও স্বীকার করে নিয়েছেন, পাড়ুই থানার লকআপে বন্দিদের অতিরিক্ত ভিড়ের জন্য এই ভুল। আদালতের নির্দেশে সরকারি আইনজীবীর সেই মন্তব্যেরও উল্লেখ রয়েছে।
ধৃত আলি জিন্নাকে আগের মামলা অর্থাৎ ১৫৫ নম্বর মামলার তদন্তকারী অফিসারের হাতেই ফেরত পাঠিয়েছে আদালত। ধৃতের ৩ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজত বহাল রয়েছে। সেই তদন্তকারী অফিসারকেও আদালত এই ভুলের জন্য সতর্ক করেছে।



Nov 01 2014 : The Times of India (Kolkata)


Are Your Men Eligible For Job, SP Asked
In a stinging indictment of Birbhum police, a Suri court on Friday directed SP Aloke Rajuria to suspend investigating officer Dhrubajyoti Dutta, relieve Parui OC Kartik Mohan Ghosh of duty , and hold a departmental inquiry into why police claimed they had arrested a `suspect' in the Makhra violence a second time when he was already in police custody .Chief judicial magistrate Indranil Chatterjee also urged the SP to think about the “kind of officers“ serving in his department and whether they are eligible for the job. Magistrate Chatterjee said he would draw the attention of Calcutta high court to the matter.
“The OC, Parui, has blindly signed the papers given to him by his officers... It is not possible for the court to ascertain whether he was sleeping or not... There remains a shadow of doubt. To remove these doubts the court recommends that the police superintendent initiate an in-depth inquiry ,“ magistrate Chatterjee said.The probe has to be conducted by someone ranked not below deputy SP .
During the hearing, the magistrate asked the Parui OC if he had submitted the report according to the court's directions on Thursday . When Ghosh said he had, assistant public prosecutor Kuntal Chatterjee told the magistrate: “I have read the report. It says the name was added as a mistake.But it does not explain why it is written that the second arrest was made from home.“ At this the magistrate asked, “Well, Mr APP , now at 10.30 am you are in the court. If somebody suddenly says that you are in Mumbai, how can it be possible?“ Chatterjee got the cue and replied, “Then somebody is lying, sir.“
On Thursday , police had produced Makhra violence suspects Biswanath Bagdi and Ali Jinna in magistrate Chatterjee's court. They were accused in case No. 152, lodged by police on the Makhra incident.To his surprise, the magistrate found that Jinna had already been arrested in case No. 155, filed by the father of slain BJP supporter Tousif Sk, on Tuesday . He had been produced in magistrate Chatterjee's court on Wednesday and remanded in five-day police custody . The magistrate summoned the SP, OC and investigating officer to explain the goof-up. Rajuria couldn't appear in court because of a personal bereavement and sent deputy SP Samit Chatterjee in his stead.
During the hearing, IO Dutta kept mumbling “sorry“ when the court sought answers. When the court asked the DSP what action had been taken, he said all steps will be taken in accordance with the court order. In the report, the IO and OC admitted there was a “mistake“.
Dutta tried to clarify that his real intention was to mention Jinna as “shown arrest“.The magistrate cornered him by asking why was Jinna then shown as arrested from home?
As Dutta fumbled, the magistrate remarked, “The development is very unfortunate...not only for the accused but also for the court. And it happened solely due to callousness of police.“
Jinna's lawyer Malay Muk herjee was quick to seize on the goof-up, saying, “If the arrest is a mistake, he should be released from this case. He is an innocent college student and was arrested only because his father is active in politics.“
Meanwhile, six more suspects were arrested on Friday for the Makhra violence. Five of them are Trinamool Congress supporters and the sixth is a BJP man. This takes the number of arrests to 17. All six have been remanded in police custody till November 5.
Two more suspects were arrested on Friday for the attack on Parui cops in Chowmandalpur village, taking the number in custody to 10.



Thursday, October 30, 2014

Police stopped opposition leaders to enter Makhra Village, but let enter the TMC goons

(সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা)
মহেন্দ্র জেনা, ৩০ অক্টোবর, ২০১৪



মাখড়া যাওয়ার পথে আটকে দেওয়া হল বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলকেও। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির পর গ্রেফতার করা হয় মুক্তার আব্বাস নকভি, কীর্তি আজাদ, উদিত রাজ, রাহুল সিংহ-সহ বিজেপির অন্যান্য নেতাদের। বিজেপির মাখড়া সফর ঘিরে এদিন সকাল থেকেই নিরাপত্তার কড়াকড়ি ছিল চূড়ান্ত পর্যায়ে। বিজেপির প্রতিনিধি দল চৌমণ্ডলপুরে পৌঁছতেই তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ।
বিজেপি নেতাদের দাবি, ১৪৪ ধারা মেনে তাঁরা চারজন মাখড়ায় ঢুকতে চাইলেও, পুলিশ সেই অনুমতি দেয়নি। এরপরই সেখানে মোতায়েন কমব্যাট ফোর্স এবং RAF-এর সঙ্গে বিজেপি নেততাদের রীতিমতো ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এরপরই বিজেপি নেতাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।


********

রাজ্যের পরিস্থিতি দমবন্ধকর:অশোক গঙ্গোপাধ্যায়





4
মাখড়ায় ঢুকতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে বিজেপির প্রতিনিধিদল। 
বুধবার বিশ্বজিত্‌ রায়চৌধুরীর তোলা ছবি।
কখনও নিষ্ক্রিয়। কখনও অতি-সক্রিয়। পাড়ুইয়ে গত ক’দিনের ঘটনা পুলিশের এই দ্বৈত ভূমিকাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।
সোমবার তৃণমূলের শতাধিক দুষ্কৃতী মাখড়া গ্রামে ঢুকে তাণ্ডব চালায় বলে অভিযোগ। তখনও ছিল ১৪৪ ধারা। গ্রামের ভিতরে ঢোকেনি পুলিশ। প্রশ্ন উঠেছিল, কী করে ১৪৪ ধারা থাকা সত্ত্বেও দুষ্কৃতী-তাণ্ডব চলল? কেনই বা পুলিশ হাত গুটিয়ে রইল?
সেই বীরভূম জেলা পুলিশই চূড়ান্ত সক্রিয়তা দেখাল বুধবার। মাখড়ায় ঢোকার আগে আটকে দেওয়া হল এ রাজ্যের তিন বিরোধী দলের নেতাদেরই! এবং তা করা হল সেই ১৪৪ ধারার যুক্তি দেখিয়েই! চাপ বাড়াতে বৃহস্পতিবার বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল মাখড়া যাবে। বিরোধীরা তো বটেই, পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন গ্রামবাসীরাও। শেখ আজমল, লড়াই বাউরি, নাজমা বিবিরা এ দিন স্পষ্ট বলেছেন, “বিরোধী নেতারা তো বোমা-গুলি নিয়ে আসেননি! অথচ পুলিশ তাঁদের ঢুকতে দিল না। হামলার সময় এই বীরত্ব কোথায় ছিল?”
রাজ্য প্রশাসনের যুক্তি, এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থেই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এবং নিয়ম মেনেই বিরোধী প্রতিনিধিদলকে গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এক সময় সিঙ্গুরে বিক্ষোভ-আন্দোলন এড়াতে ১৪৪ ধারা জারি করেছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকার। সিঙ্গুরে যাওয়ার পথে পুলিশের বাধা পেয়ে তত্‌কালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় ফিরে আসতেই আরাবুল ইসলামরা বিধানসভার লবিতে ভাঙচুর চালিয়েছিলেন! এক বিজেপি নেতার কটাক্ষ, “সেই সময় মমতা ১৪৪ ধারার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে গিয়েছিলেন, আজ তাঁর পুলিশ একই কাণ্ড ঘটাচ্ছে!”
এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ হাঁসড়া স্কুলমোড়ে পৌঁছেছিল সাংসদ অভিজিত্‌ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের দল। ছিলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মিও। অভিজিত্‌বাবু বোলপুরের এসডিপিও সূর্যপ্রতাপ যাদব ও সিআই (বোলপুর) চন্দ্রশেখর দাসের কাছে জানতে চান, কী কারণে তাঁদের আটকানো হচ্ছে। এসডিপিও বলেন, “১৪৪ ধারা আছে। ওখানে গেলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। আপনাদের নিরাপত্তার জন্যই আটকানো হচ্ছে।” অভিজিত্‌বাবু পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, “তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা যখন মাখড়ায় হামলা চালিয়েছিল, তখন ১৪৪ কোথায় ছিল?” এর পরেই পুলিশের সঙ্গে বচসা বাধে। রাস্তায় বসে পড়েন কংগ্রেস নেতারা। প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে অবস্থান-বিক্ষোভ চলে তাঁদের।
পুলিশের বাধায় মাখড়া গ্রামে ঢুকতে না পেরে হাঁসড়া
মোড়ে অবস্থান কংগ্রেস প্রতিনিধি দলের।—নিজস্ব চিত্র।
দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ বাম প্রতিনিধিদল প্রথমে আসে চৌমণ্ডলপুরে। দলে ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী আনিসুর রহমান-সহ দশ জন বিধায়ক, সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্র ডোম। গ্রামে ঢোকার মুখে তাঁদেরও আটকে দেয় পুলিশ। সেই সময় গ্রামের জনা কুড়ি মহিলা দৌড়ে চলে আসেন। পুলিশ-কর্তাদের সামনেই বাম নেতাদের তাঁরা বলেন, “চার-পাঁচ দিন ধরে আমরা পুুলিশের ভয়ে গ্রামছাড়া। খাওয়া জুটছে না। পুলিশ গ্রামের নলকূপগুলো পর্যন্ত ভেঙে দিয়েছে!”
এ দিন মাখড়ার প্রাথমিক স্কুলে অস্থায়ী ক্যাম্প বসলেও এলাকায় আতঙ্ক কাটেনি। তল্পিতল্পা নিয়ে গ্রাম ছেড়েছেন অনেকে। মসলিমা বিবি, শরিফা বিবি, খুরজান বিবিদের প্রশ্ন, “এই পুলিশের উপরে কোনও ভরসা নেই। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই মহিলা। এখানে আমাদের কী করুণ অবস্থা, তা কি তিনি জানেন না?”
শেষে বাম নেতাদের হাঁসড়া মোড় পর্যন্ত যাওয়ার অনুমতি দেয় পুলিশ। সেখানে ফের তাঁদের আটকানো হয়। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করলে গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়ে দেন এসডিপিও। ঋতব্রত বলেন, “আমরা জনপ্রতিনিধি। আমরা বোমা নিয়ে যাচ্ছি না। আপনাদেরকে বোমা মারার কথাও বলছি না!” ঋতব্রতর কথায়, “১৪৪ ধারার মধ্যেই গুলি-বোমা চলল। এখন সেই পুলিশই কত সক্রিয়!” পুলিশ বাম নেতাদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু বাম নেতারা জামিনের বন্ডে সই করতে রাজি না হওয়ায় তাঁদের নিঃশর্ত জামিন দেওয়া হয়।
হাঁসড়া মোড়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাম প্রতিনিধি দলের।—নিজস্ব চিত্র।
এই সময়েই হাঁসড়া স্কুলমোড়ে শিশির বাজোরিয়া, সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, শর্মিষ্ঠা কর পুরকায়স্থ, মহম্মদ আরশাদ আলম ও প্রভাকর তিওয়ারিকে নিয়ে চলে আসে বিজেপি-র দল। পুলিশের সঙ্গে তাঁদেরও বচসা বাধে। শিশিরবাবু বলেন, “আমরা দু’জন যাব। দু’জন গেলে তো ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন হবে না!” পুলিশকর্তারা জানিয়ে দেন, গ্রামে গেলেই উত্তেজনার সৃষ্টি হবে। পরে শিশিরবাবু কটাক্ষ করে বলেন, “পুলিশ নিশ্চয়ই নবান্ন থেকে নির্দেশ পায়নি! তাই এ ভাবে আটকে দিল!” বিজেপি-র আইনজীবী কৌশিক চন্দ্র এ দিন জানিয়েছেন, মাখড়ায় সিবিআই তদন্ত, ঘরছাড়াদের ফেরানো এবং ক্ষতিপূরণের দাবিতে এ দিন হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার পাড়ুইয়ে আসছে মুখতার আব্বাস নকভির নেতৃত্বে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। তাঁরাও বাধা পান কি না, সেটাই দেখার।

আরও - 
Bengal cops attacked with bombs when they raid suspect village

To remain in power, Mamta instigates killings at Birbhum village

দখল-যুদ্ধের প্রত্যাবর্তন

তিন জন খুন হলো, দাঁড়িয়ে দেখল পুলিশ

মহেন্দ্র জেনা ও দয়াল সেনগুপ্ত

পাড়ুই ও সিউড়ি, ২৮ অক্টোবর, ২০১৪ 
(সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা)



1
নিহত তৃণমূল কর্মী শেখ মোজাম্মেল (সবুজ গেঞ্জি) ও 
তাঁর আহত ভাই শেখ এনামুল। 
তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।
বাম জমানায় ছিল কেশপুর-নন্দীগ্রাম। তৃণমূলের শাসনে পাড়ুই!
ছবি সেই একই। গ্রাম জুড়ে সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব। বোমার ধোঁয়ায় ঢাকা চারপাশ। মাস্কেট থেকে মুহূর্মুহূ গুলি। রক্তাক্ত লাশ আর শয়ে শয়ে আতঙ্কিত মুখ।
লড়াইয়ের নেপথ্যে এলাকা দখল-পুনর্দখলের রাজনীতি। পাড়ুইয়ের মাখড়া গ্রামে সোমবার যা হল, বা গত কয়েক দিন ধরে যা হচ্ছে, তা সেই রাজনীতিরই অনিবার্য পরিণাম। লোকসভা ভোটে এ রাজ্যে বিজেপির উত্থানের পরে এই প্রথম এত বড় আকারে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষ হলো শাসক দলের। ১৪৪ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও পুলিশের চোখের সামনে সেই সংঘর্ষে প্রাণ হারালেন তিন জন। এক জন বিজেপির। দু’জন তৃণমূলের।
স্থানীয় সূত্রের খবর, তৃণমূলের নিরঙ্কুশ আধিপত্য থাকা ইলামবাজার এবং পাড়ুইয়ের বিভিন্ন গ্রামে লোকসভা ভোটের কিছু আগে থেকেই উত্থান হয়েছে বিজেপির। যার জেরে এই এলাকা ক্রমশই হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। এ দিন মাখড়ায় বহিরাগত বাহিনী এনে জমি পুনর্দখল করতে চেয়েছিল তারা। বিজেপি বাধা দিয়েছে। সব মিলিয়ে ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে ‘অপারশন সূর্যোদয়’-এর প্রতিচ্ছবি। বিজেপি রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের অভিযোগ, “নন্দীগ্রামের মতো এখানেও যৌথ বাহিনীর (শাসক দল এবং পুলিশ) হামলা হয়েছে।”
গ্রামবাসীদের দাবি, এ দিন সকাল থেকেই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ওই গ্রামে তাণ্ডব চালায় তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতী দল। বহিরাগত শ’দেড়েক দুষ্কৃতী হাতে মাস্কেট, বোমা, ভোজালি, দোনলা বন্দুক, পাইপগান, লাঠি, টাঙ্গি নিয়ে দাপিয়ে বেড়ায় গোটা গ্রাম। বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে ভাঙচুর করে, লুঠপাট চালায়। বিয়েবাড়ি তছনছ করে দেয়। শেখ তৌসিফ আলি নামে ১৯ বছরের এক তরুণের পেট ফুঁড়ে দেয় ওই দুষ্কৃতীদের গুলি। বিনা চিকিৎসায় সে পড়ে থাকে গ্রামের ভিতরে। দুষ্কৃতী-দাপটে তাকে কেউ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাননি। ঘণ্টাদেড়েক বাদে গাড়ি করে বিজেপি সমর্থক পরিবারের ওই তরুণকে যখন সিউড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তত ক্ষণে সে মারা গিয়েছে।
অভিযোগ, গোটা ঘটনাটা গ্রামের বাইরে দাঁড়িয়ে দেখেছে পুলিশ, র‌্যাফ আর কমব্যাট ফোর্স। হামলা থামাবার বিন্দুমাত্র চেষ্টা করেনি। অথচ, রবিবারই ওই এলাকায় গিয়েছিলেন রাজ্য পুলিশের আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) সিদ্ধিনাথ গুপ্ত।
বাড়ির দেওয়ালে বোমার দাগ। সোমবার মাখড়া গ্রামে বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরীর তোলা ছবি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, তৃণমূলের হামলার প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে পাল্টা হামলা চালান গ্রামের বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরাও। দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজি শুরু হয়। ঘণ্টা তিনেক পরে বোমাবাজি থামতে পুলিশবাহিনী গ্রামে ঢুকে তিন তৃণমূল কর্মীকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। শেখ সোলেমান (৪৫) এবং শেখ মোজাম্মেল (৪০) নামে দুই তৃণমূলকর্মী পরে মারা যান সিউড়ি হাসপাতালে। সোলেমানের বুকে গুলি লেগেছিল। আর মোজ্জামেলকে পিটিয়ে মারা হয়। পেটে গুলি খেয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন লাল বাস্কি ও শেখ এনামুল নামে আরও দুই তৃণমূলকর্মী। এনামুল ও মোজাম্মেল দুই ভাই এবং তাঁরা মাখড়া গ্রামেরই বাসিন্দা। লাল বাস্কির বাড়ি দুবরাজপুর থানার কলুষিতা গ্রামে। সোলেমান দুবরাজপুরের সালুঞ্চি গ্রামের বাসিন্দা।
এ দিন হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় দাবি করেছেন, তৌসিফ বাদে নিহত ও আহতেরা তাঁদের দলেরই কর্মী। তৌসিফের দিদি তনজিনা বিবি হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে বলেন, “আমার ভাই রাস্তায় ঢালাইয়ের কাজ করছিল। তৃণমূলের বাইক-বাহিনী গ্রামে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। একটা গুলি ভাইয়ের পাঁজরের নীচে বিঁধে যায়।”
মাখড়া লাগোয়া চৌমণ্ডলপুরে গত শুক্রবার বোমা উদ্ধার করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন পাড়ুই থানার ওসি। সোমবার সকালে সেখানে যাওয়ার কথা ছিল জেলা বিজেপির প্রতিনিধি দলের। তাদের আটকাতেই তৃণমূলের চাপে পুলিশ-প্রশাসন রবিবার রাতারাতি ইলামবাজার ব্লকের মঙ্গলডিহি ও বাতিকার এই দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে বলে বিজেপি-র অভিযোগ। মাখড়া গ্রামটি মঙ্গলডিহি পঞ্চায়েতের অন্তর্গত।
১৪৪ ধারা থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে এত বড় দুষ্কৃতী দল মাখড়ায় ঢুকে পড়ল? কেন পুলিশ গ্রামের বাইরে দাঁড়িয়ে রইল? এই সব প্রশ্নের উত্তর মেলেনি জেলা ও রাজ্যের পুলিশকর্তাদের কাছে। ডিআইজি (বর্ধমান রেঞ্জ) ত্রিপুরারি বলেন, “আমি এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করব না। পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলুন।” পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া ফোন ধরেননি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনন্দ রায়-ও মন্তব্য করেননি। মন্তব্য করেননি আইজি (আইনশৃঙ্খলা) অনুজ শর্মাও।
বীরভূম জেলা বিজেপি-র সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, তিনি এ দিন সকালেই খবর পান, ইলামবাজার ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা বীরভূম জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ জাফারুল ইসলামের নেতৃত্বে সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা শাল নদী পেরিয়ে কানপুর গ্রাম হয়ে মাখড়ায় ঢুকবে। এ রাজ্যে বিজেপির প্রথম ‘রাজনৈতিক শহিদ’, ইলামবাজারের কানুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ রহিম খুনে মূল অভিযুক্ত এই জাফারুলই। দিলীপবাবু বলেন, “আমি সঙ্গে সঙ্গে সে কথা বোলপুরের এসডিপিও সূর্যপ্রতাপ যাদব এবং পাড়ুইয়ের সিআই-কে জানাই। তবু পুলিশ কিছু করল না!”


সকাল ১০টা নাগাদ কিছু পুলিশকর্মী মাখড়া গ্রামে পুরুষদের ধরপাকড় শুরু করে। হাবুল মিস্টার ও শেখ প্রহ্লাদ নামে নিরীহ দুই গ্রামবাসীকে আটক করা হয় বলে অভিযোগ। এর পর বেলা ১১টা নাগাদ শাল নদী পেরিয়ে তৃণমূলের দুষ্কৃতী বাহিনী প্রথমে হামলা চালায় মাখড়ার দক্ষিণপাড়ায়। ওই পাড়ার বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের অভিযোগ, হামলার নেতৃত্বে ছিলেন জাফারুলই। ও দিকে, জনা পঞ্চাশেকের মোটরবাইক বাহিনী দু’দলে ভাগ হয়ে জাহানাবাদ-মোল্লাপাড়ার দিক থেকে গ্রামে ঢোকে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এলোপাথাড়ি বোমা ছুড়তে ছুড়তে দুষ্কৃতীরা প্রথমেই বিজেপি সমর্থক শেখ জিয়া আলির বাড়িতে হামলা চালায়। তিনি বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর বাড়িতে ভাঙচুর, লুঠপাট চালানোর পরে দুষ্কৃতীরা পাশের বাড়িগুলিতে ভাঙচুর করতেও শুরু করে। এমনকী মারধরের হাত থেকে রেহাই পাননি মহিলারাও। বিজেপি সমর্থক পরিবারের মেয়েদের, এমনকী এক অন্তঃসত্ত্বারও শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ। গ্রামের একাধিক তরুণী এ দিন বলেন, “তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী আমাদের মাথায় বন্দুক ধরে। ভোজালি দেখায়। রেপ করার হুমকি দেয়!”
হামলার কয়েক ঘণ্টা পরেও আতঙ্ক যায়নি বাসিন্দাদের। এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা শেখ আসগর আলি, শেখ আক্কেল আলির কথায়, “এত বয়স হয়ে গেল। আমাদের এলাকায় এমন গুন্ডামি আর লুঠতরাজ জীবনে কখনও দেখিনি! তৃণমূলের গুন্ডারা মুহূর্তের মধ্যে গোটা গ্রাম তছনছ করে দেয়। পুলিশ প্রথম দিকে গ্রামে ছিল। তবু হাত গুটিয়ে বসে রইল।” আক্রান্ত পরিবারের মহিলারা জানালেন, গুলি চলা শুরু হতেই পুলিশ গ্রাম ছেড়ে কেটে পড়ে।
দক্ষিণপাড়াতেই আজ, মঙ্গলবার বিয়ে হওয়ার কথা শেখ সুজলের। সেই উপলক্ষে বাড়িতে আত্মীয়েরা এসেছিলেন। প্যান্ডেল খাটানো হয়ে গিয়েছিল। রান্নার তোড়জোড় চলছিল। সুজলের ভাই শেখ উজ্জ্বল বলেন, “আগে তৃণমূল করতাম। এখন গ্রাম বাঁচাতে বিজেপি করি। সেই রাগেই তৃণমূলের বাহিনী আমাদের বাড়িতে হামলা করে। প্যান্ডেল ছিঁড়ে ফেলে বাড়িতে লুঠপাটে চালায়। মেয়েদের শাড়ি ধরে টানাটানি করে। বাড়ির একটা ছোট মেয়ের শ্লীলতাহানিও করে।” উজ্জ্বলদের পাশেই শেখ তৌসিফের বাড়ি। নিহত এই তরুণের বাবা, গ্রামের বিজেপি কর্মী শওকত আলি বলেন, “ছেলে রাস্তার কাজ করতে গিয়েছিল। তৃণমূল গুলি করে ওকে মেরে দিল! ওর তো কোনও দোষ নেই!”
তত ক্ষণে মোটরবাইক বাহিনী গ্রামে ঢুকে হামলা শুরু করেছে। উত্তরপাড়া, পশ্চিমপাড়া, মোড়লপাড়ায় মুড়ি-মুড়কির মতো বোমা পড়তে শুরু করেছে। সেই ধাক্কা সামলে ধীরে ধীরে প্রতিরোধ শুরু করেন এলাকার বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরাও। অভিযোগ, তাঁরাও পাল্টা বোমা মারতে শুরু করেন তৃণমূলের বাহিনীকে লক্ষ্য করে। নিজের বাড়িতেই পিটিয়ে মারা হয় স্থানীয় তৃণমূল কর্মী   মোজাম্মেলকে। তাঁর দাদা   এনামুলকেও বেধড়ক পেটানো হয়। গ্রামের মসজিদ লাগোয়া জমিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা এনামুল যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে বলেন, “তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে আমি ওই দলে আছি। বিজেপির সন্ত্রাসে অনেক দিন গ্রামছাড়া ছিলাম। এ দিনই গ্রামে ফিরি। তার পরেই বিজেপি হামলা চালায়।” কিছু পরেই দক্ষিণপাড়ায় গুলি করে মারা হয় তৃণমূলকর্মী সোলেমানকে। পাল্টা হামলার মুখে পড়ে পিছু হটে তৃণমূলের বাহিনী।
বিজেপির বীরভূম জেলা   সভাপতি দুধকুমার মণ্ডল এ দিন অভিযোগ করেন, “দুবরাজপুর, ইলামবাজার থেকে শ’য়ে শ’য়ে   দুষ্কৃতী ভাড়া করে মাখড়া গ্রাম    দখলের ছক কষেছিল তৃণমূল। অনুব্রত মণ্ডল নিজে ইলামবাজারের পার্টি অফিসে বসে গোটা অপারেশন পরিচালনা করেছেন।”
তার জবাবে এ দিন জেলা    তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেছেন, “কিছু হার্মাদ সিপিএম ছেড়ে বিজেপি-তে গিয়েছে। তারাই   এ দিন হামলা চালিয়ে আমাদের কর্মীদের মেরেছে।”
যা শুনে দুধকুমারের প্রতিক্রিয়া, “সশস্ত্র হামলা ঠেকাতে গ্রামবাসীরাই স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধ করেছেন। আর তাতেই হয়তো এ দিন তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা মারা গিয়েছে।”

**********

পুলিশ সক্রিয় হলে এ কাণ্ড হতো না, ক্ষোভ মাখড়ার

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাড়ুই, ২৮ অক্টোবর, ২০১৪, 



3

পাড়ুই হিংসার তৃতীয় বলি তৃণমূল সমর্থক শেখ সোলেমান। সিউড়ি হাসপাতালে। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

চপ-মুড়ি খাওয়ার সময় আছে। বাংলা সিনেমার গানের কলি গুনগুন করারও সময় ছিল বিস্তর। কিন্তু সোমবার সংঘর্ষ থামানোর সময় দেখা মেলেনি পুলিশের বীরভূমের পাড়ুই থানার মাখড়া গ্রাম সরব শুধু এই অভিযোগে। গ্রামবাসীর একটা বড় অংশের ক্ষোভ, গ্রাম থেকে বড়জোর এক কিলোমিটার দূরে হাজির থাকা পুলিশ, র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স একটু সক্রিয় হলে তিনটে প্রাণ যেত না।
২০০৭ সালে পুলিশকে নিষ্ক্রিয় করে রেখেই সিপিএম নন্দীগ্রাম ‘পুনদর্খল’ করে বলে অভিযোগ     ছিল সে সময়ের বিরোধী দল তৃণমূলের। সাত বছর পরে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ এনেছে অন্যতম বিরোধী দল বিজেপি।
বিজেপি সমর্থক শেখ তৌসিফের পেটে বিঁধেছে গুলি। নিহত ওই তরুণের দাদা শেখ সাবির আলির অভিযোগ, “পুলিশ চেষ্টা করলে আমাদের গ্রামে যারা হামলা করতে ঢুকেছিল, তাদের সবাইকে ধরতে পারত। যে লোকগুলো বোমা-বন্দুক নিয়ে ঢুকেছিল, তাদের অস্ত্র কেড়ে নিতে পারত! একটা কাজও ওরা করেনি।” গ্রামের বাসিন্দা শেখ আজহার, শেখ জালেনুর, শেখ লালুদের ক্ষোভ, “পুলিশ এ দিন     দূরে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখেছে। ওরা সংঘর্ষ থামাবে কী করে? ওরা তো চপ-মুড়ি খাচ্ছিল। আর গুনগুন করে গান গাইছিল।(আরও....)


দখল-যুদ্ধের প্রত্যাবর্তন

একটু পানি চেয়েছিল দিতে পারিনি

মহেন্দ্র জেনা ও দয়াল সেনগুপ্ত

পাড়ুই ও সিউড়ি, ২৮ অক্টোবর, ২০১৪
2

পেট ফুঁড়ে দিয়েছে গুলি। সিউড়ি হাসপাতালে মাখড়াগ্রামের শেখ তৌসিফ আলির নিথর দেহ। তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

ঝুড়িটা মাথা থেকে ছিটকে পড়তেই খোয়াগুলো ছড়িয়ে পড়েছিল চার দিকে।  
সেকেন্ড কয়েক স্তব্ধতা। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা তৌসিফ এ বার নিজেও পড়ে গেল হাঁটু মুড়ে।
মাখড়া গ্রামের মাঝ বরাবর সিমেন্টের কাঁচা ঢালাইয়ের রাস্তা মাড়িয়ে তখন মরিয়া হয়ে ছুটছেন গ্রামবাসীরা।
চোখ বন্ধ করে সোমবার   সকালের ছবিটা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন শেখ সাবির আলি। মাখড়ায়    তৃণমূলের ‘হার্মাদ’ বাহিনীর আক্রমণের প্রথম বলি, সতেরো বছরের তৌসিফের দাদা। 
সোমবার সন্ধ্যায় বাড়ির উঠোনে শুয়ে এক টানা বলে চলেছেন, “ভাইটাকে একটু পানি দিতে পারলাম না রে...একটু পানি চেয়েছিল শুধু!”
এ দিন বেলা এগারোটা নাগাদ তৃণমূলের ‘আক্রমণ’ শুরু হতেই সাবির শুনেছিলেন, মোটরবাইকের আওয়াজ, আর থেকে থেকেই ‘ফট ফট’ শব্দ। অচেনা শব্দটা ‘ঠাওর’ করতে পারেননি তিনি। সাবির বলছেন, “গুলি চলছে ঠাওর করতে পারিনি। অন্যদের পালাতে দেখে কাজ ফেলে আমিও পালাতে যাব, দেখি ভাইয়ের মাথা থেকে ঝুড়িটা ঝড়াৎ করে পড়ে গেল।” আর, তার পরেই চোখের সামনে দেখলেন মুখ থুবড়ে পড়ে যাচ্ছে তৌসিফ। ছুটে যেতেই শুনেছিলেন, “ভাইটা বার কয়েক বলল, পানি-পানি। আমি এ দিক ও-দিক তাকিয়ে কোথাও পানি খুঁজে পেলাম না।” গ্রামের অন্যদের সঙ্গে পাঁজাকোলা করে তৌসিফকে ‘নিরাপদ’ আশ্রয়ে নিয়ে গেলেও পানি আর দেওয়া হয়নি তার মুখে। সে আক্ষেপটা যাচ্ছে না সাবিরের।
তিনি বলছেন, “হাসপাতালে নিয়ে গেলেও ভাইটা হয়তো বেঁচে যেত। কিন্তু বোমা-গুলির মধ্যে সে সুযোগটাও পেলাম কই! তিন ঘণ্টা পড়ে থেকে চোখের সামনে দেখলাম ভাইটা আস্তে আস্তে নেতিয়ে গেল।”
গ্রাম দখলের ‘লড়াই’ থিতিয়ে গেলে তৌসিফকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সিউড়ি সদর হাসপাতালে। সেই হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে তার দিদি তনজিরা বিবির আক্ষেপ, “ভাইটা রাস্তার কাজ করছিল। তৃণমূলের বাইক-বাহিনী তাকেও রেয়াত করল না গো!” তৌসিফের বাবা শওকত আলি গুলি চালাচালির সময়ে বাড়ি ছিলেন না। বলছেন, “শুনলাম ছেলেটা রাস্তায় কাজ করছিল। আমি বিজেপি করি বলে ছেলেটাকেও মারতে হবে?” (আরও....)


তৃণমূল-বিক্ষুব্ধদের ভিড় বিজেপিতে, ফিরছে হিংসাও

নিজস্ব প্রতিবেদন

২৮ অক্টোবর, ২০১৪,

মারের জবাবে পাল্টা মার! সেই এলাকা দখল এবং পুনর্দখল ঘিরে রক্তপাতের রাজনীতি! পুলিশ-প্রশাসনের সেই একই নিষ্ক্রিয় ভূমিকা! বীরভূমের পাড়ুইয়ে গ্রামদখল ঘিরে রাজনৈতিক সংঘর্ষ মনে করিয়ে দিচ্ছে কয়েক বছর আগে বাংলার সেই চেনা ছবি।
পাড়ুইয়ে কয়েক দিন আগে পুলিশের উপরে হামলা এবং এ বার সংঘর্ষে তিন জনের মৃত্যুর ঘটনায় সামনে এসেছে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির বিবাদ। এই ঘটনাপ্রবাহ অনেককেই মনে করিয়ে দিচ্ছে বাম জমানায় কেশপুর-নন্দীগ্রামে সশস্ত্র লড়াইয়ের কথা। তৎকালীন শাসক দল সিপিএমের শিবির ছেড়ে সেই সময় বিরোধী দল তৃণমূলে নাম লেখানোর প্রবণতা যত বাড়ছিল, তত উত্তপ্ত হচ্ছিল রাজ্য-রাজনীতি। বামফ্রন্ট সরকারের শেষ কয়েক বছর রাজনৈতিক সংঘর্ষ বারেবারেই শিরোনামে এসেছে, যার অভিঘাত পৌঁছেছে কেন্দ্রীয় সরকার পর্যন্ত। সোমবারের ঘটনার পরে দেখা গেল, সব একই আছে, বদলছে শুধু দলগুলির ভূমিকা। তৃণমূল এখন শাসক। আর তাদের ফেলে আসা বিরোধীর জায়গাটা নিয়েছে বিজেপি


শিশুকোলেই গ্রাম ছাড়লেন হালিমারা

মৃতপ্রায় মোজাম্মেলকে জল দিলেন বিজেপি কর্মী

মহেন্দ্র জেনা

মাখড়া, ২৮ অক্টোবর, ২০১৪

5
গ্রামে তাণ্ডবের আতঙ্কে এলাকা ছাড়ছেন মাখড়া 
গ্রামের বাসিন্দারা।
দুপুর দেড়টা। মাখড়া গ্রামের দক্ষিণপাড়ার

কংক্রিটের রাস্তায় দেখা মিলল হালিমা বিবির। সঙ্গে বছর চারেকের মেয়ে। হাতে একটা প্লাস্টিকের ব্যাগ নিয়ে হনহন করে হাঁটছেন। মুখেচোখে আতঙ্ক। কোথায় যাচ্ছেন, জানতে চাওয়ায় বললেন, “গ্রামই ছাড়ছি!”
কেন ছাড়ছেন?
বছর সাতাশ-আঠাশের অন্তঃসত্ত্বা হালিমার জবাব, “এ দিন আমাদের গ্রামে যা হল, তার পরে আর কোন ভরসায় এখানে থাকব। আমার স্বামী আগেই পালিয়েছেন। বাড়ির উঠোনে বোমা মারল তৃণমূলের গুন্ডারা। ভয়ে পড়ে যাই। চিকিত্‌সক জানিয়েছেন, আগামী মাসেই আমার সন্তান জন্ম দেওয়ার কথা। জানি না, পড়ে যাওয়ার ফলে গর্ভস্থ সন্তানের কী হবে!” জানালেন, ইলামাবাজারে বাপের বাড়িতে চলে যাচ্ছেন।
শুধু হালিমা বিবিই নয়, এ দিন সশস্ত্র দুষ্কৃতী বাহিনীর হামলার পর থেকে আতঙ্কে কাঁটা হয়ে রয়েছেন মাখরার অধিকাংশ সাধারণ মানুষই। হালিমার মতোই গ্রাম ছেড়েছেন আরও অনেক মহিলা। তাঁদের মধ্যে অনেকে তৃণমূল সমর্থক। অনেকে বিজেপি সমর্থক পরিবারের বউ বা মেয়ে। কিছুটা এগোতেই স্থানীয় হাঁসড়া বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী রেশমা খাতুন পথ আটকাল। মা ফজিলা বিবিকে ডেকে নিয়ে রেশমা বলল, “এ দিন সকালে বাবা শেখ জিয়ার আলিকে পুলিশ শাসিয়ে গিয়েছে, যে কোনও সময়  গ্রেফতার করবে। আমার বাবার দোষ, তিনি বিজেপি করেন।” দক্ষিণপাড়ার যে-সব বাড়িতে এ দিন তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব ও লুঠপাট চালিয়েছে বলে অভিযোগ, তারই একটি হল রেশমাদের বাড়ি। রেশমার কথায়, “তৃণমূলের গুন্ডারা এ দিন আমাদের বাড়িতে ঢুকে বোমা ছুড়েছে। সোনাদানা, টাকা লুঠ করেছে।, বাড়ির আসবাবপত্র ভেঙে তছনছ করেছে। আমাকে অশ্রাব্য গালিগালাজও করে।” প্রতিবেশী আঙ্গুরা বিবির অভিযোগ, স্থানীয় কাচপুকুর পাড়ে বসে পরের পর বোমা বেঁধেছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। সেখান থেকে নাগাড়ে বোমা ছোড়া হয়েছে দক্ষিণপাড়ায়।(আরও.....)

********************

পুলিশ কোথায়, গ্রাম ছাড়ার ঢল মাখড়ায়

দয়াল সেনগুপ্ত ও মহেন্দ্র জেনা

মাখড়া (পাড়ুই), ২৯ অক্টোবর, ২০১৪


4

আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছেন মাখড়ার বাসিন্দারা। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

রক্ত ঝরা সংঘর্ষের পরে কেটে গিয়েছে গোটা একটা দিন। মাখড়া গ্রামে আতঙ্কের ছায়াটা একই রকম স্পষ্ট।
সোমবার যখন পাড়ুইয়ের ওই গ্রামে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে মুড়ি-মুড়কির মতো বোমা পড়ছে, গুলি ছুটছে, তখন পুলিশ আসেনি। তারা এসেছিল সংঘর্ষ থামার পরে। মাখড়া গ্রামে পুলিশের দেখা মিলল না মঙ্গলবারও। আতঙ্কিত বাসিন্দাদের ভয় কাটাতে গ্রামে আসেননি বীরভূম জেলা পুলিশ-প্রশাসনের কোনও কর্তাই। এ দিনও এক দল পুলিশ অবশ্য চোখে পড়েছে। তা অবশ্য মাখড়া থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে কুলতোড় সেতুর কাছে! আর এক দল ছিল মাখড়া থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরের হাঁসড়া স্কুল মোড়ে, ইলামবাজার-বোলপুর পিচ রাস্তার ধারে। পুলিশের এই ভূমিকায় আতঙ্ক আরও চেপে বসছে এলাকায়। তাই দলে দলে গ্রাম ছাড়ছেন বাসিন্দারা। গ্রামের মসজিদ থেকে সমানে গ্রাম না ছাড়ার জন্য আবেদন জানানো সত্ত্বেও তল্পিতল্পা গুটিয়ে যে যেমন পারছেন গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে।
আর যাঁরা গ্রামে থেকে যাচ্ছেন, তাঁরা মরিয়া হয়ে এককাট্টা হয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, পুলিশ না থাকার সুযোগে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা ফের যে কোনও সময় হামলা চালাতে পারে। তাই নিজেরা এক হওয়া দরকার। মঙ্গলবার গ্রামে গিয়ে দেখা গিয়েছে, কোথাও গ্রামবাসীরা যৌথ উদ্যোগে রান্নাবান্না করছেন। কোথাও একযোগে চলছে পরিবেশন এবং খাওয়াদাওয়া। (আরও.....)


মাখড়া যেন শ্মশান, পুলিশহীন গ্রাম ছাড়ছেন মহিলারা

মহেন্দ্র জেনা ও দয়াল সেনগুপ্ত

মাখড়া ও সিউড়ি, ২৮ অক্টোবর, ২০১৪

ফের আক্রমণের আতঙ্কেই দিন কাটল মাখড়া-র। অথচ এমন পরিস্থিতিতে গ্রামবাসীদের পাশে যাদের দাঁড়ানোর কথা, মঙ্গলবার সারা দিন গ্রামের কোথাও সেই পুলিশেরই দেখা মেলেনি। অবশ্য গ্রাম থেকে কিলোমিটার দেড়েক দূরে হাঁসড়া স্কুল মোড় এবং প্রায় চার কিলোমিটার দূরের কুলতোড় সেতুর কাছে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন ছিল। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত তারা গ্রামের ভেতরে ঢোকেনি। কিন্তু কেন? এই প্রশ্ন উঠলেও পুলিশের তরফে এ দিন কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
নতুন করে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও সোমবারের দুষ্কৃতী হামলায় এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত এক জনও গ্রেফতার হয়নি। এমনকী, জিজ্ঞাসাবাদের জন্যও আটক করা হয়নি কারওকে। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ওই ঘটনায় পাড়ুই থানায় এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। পুলিশ কি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করবে? মেলেনি সেই প্রশ্নের উত্তরও।
এ দিন গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সোমবারের তাণ্ডব-চিহ্ন ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। আতঙ্কের জেরে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে গ্রাম ছাড়তে দেখা যায় বেশির ভাগ পরিবারের মহিলাদের। সিংহ ভাগ পুরুষ যদিও পাহারার দায়িত্ব নিয়ে গ্রামেই রয়ে গিয়েছেন।

গবাদি পশুকে নিয়ে গ্রাম ছাড়ছেন মাখড়ার বাসিন্দারা। ছবি বিশ্বজিত্ রায়চৌধুরী।
কিন্তু গ্রাম কেন ছাড়ছেন?
এক মহিলা বললেন, “গ্রামের দু’টি তাজা প্রাণ চলে গেল পুলিশের চোখের সামনে। তারা কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি। এর পর আর কোন ভরসায় থাকব এখানে? ফের হামলা হবে না, সেই নিশ্চয়তা কোথায়?” অন্য এক মহিলার কথায়, “এত বড় একটা ঘটনার পরেও গ্রামের কোথাও কোনও পুলিশ দেখছেন? তারাই যেখানে ঢুকতে ভয় পাচ্ছে, সেখানে আমরা রাত কাটাবো কেমন ভাবে?” (আরও.....) 

**********************
**********************
The Telegraph
Wednesday , October 29 , 2014


Locked and loaded but no order to act

Policemen wait 2km outside Makhra village in Birbhum at 1.15pm on Monday. The force was waiting for reinforcements to arrive.
Moyna Khatun, the 12-year-old girl who became unconscious after a bomb exploded on the tin roof of her house, has been shifted to a relative’s house 4km away in Belpata. “I don’t want to go back,” Moyna said. Pictures by Indrajit Roy
Calcutta, Oct. 28: A Birbhum policeman who was part of the contingent that waited for over two hours to enter Makhra village citing lack of reinforcements has said the team was “sufficiently armed” to tackle the attackers and just needed “an order to act”.
“We were around 30 in the contingent and had seven Insas rifles, two 9mm pistols, two weapons to fire rubber bullets and two units of tear gas shells. We were sufficiently armed to tackle the 300-odd people who were closing in on the village from two sides,” the policeman said.
He added: “The only thing we did not have was an order to act.”
The armed police contingent waited for over two hours from 12.30pm on an approach road 2km from Makhra village. They were seen eating bread, puffed rice and rosogollas.
Asked yesterday about the two-hour wait for reinforcements, additional superintendent of police Ananda Roy had said: “It was not possible to enter the village in such a volatile situation. So we had to wait for reinforcements.”
Roy and sub-divisional police officer S.P. Yadav, who were leading the contingent, could not be contacted today. The decision by the police to wait for reinforcements came three days after a team was beaten back in nearby Choumandalpur during a raid to recover bombs.
The account by the policeman, who requested not to be identified, captures the “helplessness” of the state’s law-enforcers, who have been hobbled by political interference since the Left regime. 
Violence FIRs
Four FIRs were lodged at Parui police station today in connection with the Makhra violence.
While two of the FIRs were lodged by the family members of Mozammel Haque and Suleman Sheikh, the Trinamul supporters who were killed in the violence, the third was lodged by the family of Taushik Ali, who was killed after being hit by a bullet while laying a road. The fourth FIR was lodged by the police.
Taushik’s family has named 20 people in the FIR, including the Trinamul block president.



Bombs booming, cop says: ‘we’re having puffed rice and bread’

Oct. 27: Three persons were killed in Birbhum today when suspected Trinamul supporters attacked a BJP-dominated village in a “recapture raid” that is being compared to the infamous and self-destructive Nandigram operation by the CPM in 2007.
A political turf war has been going on in Birbhum for the past few weeks — an explosive phase was in evidence on Friday when a police party was beaten back with bombs by suspected BJP supporters in Choumandalpur, 7km from Makhra village where today’s raid took place.
What happened today was more alarming than usual for several reasons — not least because the audacity of the attackers and the failure of Bengal police to act were exposed on a day the nation’s top security officials were in the state to probe the Burdwan blast case. ( )
The following information has been put together on the basis of accounts from villagers and police sources.
First death
The first person to die was a 24-year-old man, Taushik Ali, who was working on a village road project.

Read More............


Return to frontpage



"Trinamool supporters" target village over wage row

MAKHRA (BIRBHUM), October 29, 2014

    KATHAKALI NANDI
    SOUMYA DAS

Villagers mourn the death of Sheikh Tousif Ali in Makhra village on Tuesday. Photo: Kathakali Nandi
The HinduVillagers mourn the death of Sheikh Tousif Ali in Makhra village on Tuesday. Photo: Kathakali Nandi

Miscreants hurled bombs despite Section 144 being imposed on Makhra

On Monday, when the police came knocking on the doors of Ashrafa Bibi (name changed) to inform her family members that they should flee the village or else they would be attacked, they did as they were told. As the villagers rushed out of their homes, masked miscreants targeted them with country-made guns and bombs, killing three persons.
“The police stood silent while miscreants hurled bombs at us as we were trying to escape. This happened despite Section 144 being imposed on the village,” says Bibi. Prohibitory orders were clamped after police personnel on a raid were attacked last Friday in the neighbouring Choumondalpur village.
While the real motive remains unknown, villagers claim that the miscreants were supporters of the All India Trinamool Congress (AITC) belonging to other villages. The attack on Makhra was to terrorise the locals, they charged.
The village comprises mostly Muslims who, of late, have shifted their allegiance to the Bharatiya Janata Party (BJP).

The Times of India



MAKHRA (BIRBHUM): Police in West Bengal's Birbhum district on Tuesday made an attempt to defend their inaction which left three people dead. 

But the move has raised questions like why did the police turn the other way while marauders forced into Makhra village when the SDO himself had enforced prohibitory orders on October 25? According to a section of villagers, police had made a public announcement that prohibitory orders had been clamped in Batikar and Mangaldihi gram panchayat areas which sweeps across the violence-stormed villages. 

Not only that, the three deaths could not prod police to go beyond that five-minute route march before sundown. They remained within the security of their camps in Hansra high school, a km away. If villagers are to be believed, the two-pronged attack on Makhra was preceded by a police patrol team. This could not be independently confirmed. 




MAKHRA (BIRBHUM): Trapped in a no-win situation, Birbhum police on Tuesday made a feeble attempt to defend their inaction which left three dead, including one barely out of his teens. But the more they tried to defend themselves, the deeper they were caught in the mud.

Why did the police turn the other way while marauders forced into Makhra village when the SDO himself had enforced Sec 144 CrPC on October 25? According to a section of villagers, police had made a public announcement that prohibitory orders had been clamped in Batikar and Mangaldihi gram panchayat areas, which sweeps across the violence-stormed villages.



MAKHRA ( BIRBHUM): The shamiana hasn't been pulled down. The guests who had arrived for Tuesday's wedding are debating whether they should stay back for the burials once the bodies arrive. Sk Azhar Ali, the bridegroom's father, has a bigger problem - his son Usman is so terrorized by Monday's violence that he slipped out of his home last night and is refusing to return to Makhra. Few people want to stay here tonight. 

It isn't only Usman. Many people are making a beeline to flee Makhra before the sun sets. It is nothing short of an exodus. 

A visibly nervous Azhar says he has called off the marriage. Pointing at the haystack that had been set ablaze, he says: "They targeted my home and looted ornaments, cash and even food - 20 kg chicken and 10 kg fish. My son Usman couldn't bear to see Tousif Sk, our neighbour, shot dead. He fell into an epileptic fit at the sight of the bullet-ridden body. He didn't want to stay last night; he still doesn't want to return." 



Related : 

Police recovered huge cache of bombs from Sattora healh centre at Parui

Parui OC attacked, by Bengal ruling party, admitted in ICU