Saturday, November 1, 2014

After killing democracy in West Bengal Mamta led TMC now killing own partymen at Bhangor

ভাইফোঁটায় রক্তাক্ত ভাঙড়

তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে হত ২, কাঠগড়ায় আরাবুলই

নিজস্ব প্রতিবেদন (সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা)

২৬ অক্টোবর, ২০১৪





1-1

রমেশ ঘোষালের শোকাহত পরিজনেরা।

ফের ভাঙড়। ফের সেই আরাবুল ইসলাম!
কলেজ শিক্ষিকাকে জগ ছুড়ে মারা থেকে শুরু করে প্রাক্তন মন্ত্রী আব্দুর রেজ্জাক মোল্লার উপরে হামলা একের পর এক ঘটনায় তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের নাম উঠে এলেও তাঁকে বরাবরই ছাড় দিয়ে এসেছেন শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই প্রশ্রয়ে লাগামছাড়া আরাবুল গোষ্ঠী শনিবার তাণ্ডব চালাল ভাঙড়ে। তৃণমূলেরই অন্য এক গোষ্ঠীর উপরে সেই হামলার জেরে পনেরো মিনিটের ব্যবধানে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। জমি কেনাবেচার দালালির বখরা নিয়ে গোলমাল আর এলাকা দখলে রাখার মরিয়া চেষ্টাই এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের নেপথ্যে, জানাচ্ছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতাদেরই একাংশ।
দলের ব্লক সভাপতি ওহিদুল ইসলামের অনুগামীদের সঙ্গে কিছু দিন ধরেই বিরোধ চলছিল আরাবুল অনুগামীদের। তার জেরে এ দিন সকাল থেকেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ভাঙড়-২ ব্লকের বেঁওতা গ্রাম। দফায় দফায় গুলি চলে। ব্যাপক বোমাবাজি হয়। তখন ওহিদুল অনুগামী হিসেবে পরিচিত রমেশ ঘোষালের (৪২) বাড়িতে ভাইফোঁটার তোড়জোড় চলছিল। তারই মাঝে ঢুকে পড়ে তাঁর পেটে-বুকে চারটি গুলি করে এক দল যুবক। তারা আরাবুলের অনুগামী বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই রমেশের মৃত্যু হয়। তাঁর বাড়ি, দু’টি মোটরবাইক ও কাপড়ের দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান বাপন মণ্ডল (১৯) নামে আর এক তৃণমূল কর্মী। তিনি আরাবুল-অনুগামী হলেও নিজের গোষ্ঠীর লোকেদেরই ছোড়া গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে তাঁর গায়ে লাগে বলে পুলিশের অনুমান। আরাবুলের অবশ্য দাবি, তিনি বা তাঁর কোনও অনুগামী এ দিনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।
কেন এ দিন হঠাৎ উত্তপ্ত হল বেঁওতা গ্রাম?
স্থানীয় গ্রামবাসী ও তৃণমূূল নেতাদের একাংশের বক্তব্য, গোলমালের সূত্রপাত কয়েক মাস আগেই। চারটি সংস্থা বেঁওতা-১ এবং বেঁওতা-২ পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ৭০০ বিঘা জমি কিনবে বলে স্থির করে। তার মধ্যে ৪০০ বিঘা জমি কেনা হয়ে গিয়েছে। এই জমি কেনাবেচাকে কেন্দ্র করে শাসক দলের ছত্রছায়ায় সক্রিয় হয়েছে একটি চক্র। যারা দালালি আদায় করছে। তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, মোট দালালির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৮০ কোটি টাকা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দুই পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানরা যে হেতু ওহিদুল-ঘনিষ্ঠ, তাই দালালিতে ভাঙড়-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আরাবুলের নিয়ন্ত্রণ থাকছিল না। সেই নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে তিনি নিজের দলেরই পঞ্চায়েত প্রধানদের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার ব্যবস্থা করেন।
তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, অনাস্থায় হেরে মাসখানেক আগেই বেঁওতা-২ পঞ্চায়েতের প্রধান মর্জিনা বিবিকে পদ থেকে সরতে হয়। তার পর আরাবুলের ‘কোপে’ পড়েন বেঁওতা-১ পঞ্চায়েতের প্রধান সত্যজিৎ মণ্ডল ওরফে পাঁচু। সরতে হয় তাঁকেও। তা সত্ত্বেও পদচ্যুত ওই প্রধানদের অনুগামীদের দাপটে জমি লেনদেনের দালালিতে ভাগ বসাতে পারছিলেন না আরাবুল। ফলে তিনি মরিয়া হয়ে ওঠেন বলে অভিযোগ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন ধরেই আরাবুল এবং ওহিদুল গোষ্ঠীর মধ্যে মারধর, হুমকি, শাসানি, পাল্টা শাসানি ঘিরে গ্রামে উত্তেজনা ছিল। বৃহস্পতিবারই মারধর করে রমেশের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে শুক্রবার রাতে পুলিশের একটি
টহলদার গাড়ি পাঠানো হয় গ্রামে। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ লাঠি, রড, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে রমেশের বাড়িতে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারীরা গুলি-বোমা ছুড়তে ছুড়তে ঢোকে। রমেশের স্ত্রী আশাদেবী বলেন, “আরাবুলের লোকজনের পা জড়িয়ে ধরেছিলাম। বলেছিলাম, টাকা লাগলে দেব। স্বামীকে মেরো না। ওরা শুনল না।”
রমেশকে খুন করার পরে দুষ্কৃতীরা পাশেই পাঁচুবাবুর বাড়িতে চড়াও হয়। বিপদ বুঝে ছেলেকে নিয়ে বাড়ি থেকে পালান পাঁচুবাবু। তাঁর কথায়, “দিন কয়েক আগেও আরাবুল বাহিনী রাস্তায় আমার উপরে চড়াও হয়েছিল। এ দিন রমেশের বাড়ি থেকে ওরা আমার বাড়িতে আসছিল। আমি ছেলেকে নিয়ে পালাতে থাকি। উল্টো দিক দিয়ে আরাবুলের আর একটি বাহিনী গুলি চালাতে চালাতে আসে। আমাকে লক্ষ করে গুলি চালায়। আমি ছেলেকে নিয়ে নয়ানজুলিতে ঝাঁপিয়ে পড়ি।

বাপন মণ্ডলের শোকাহত পরিবার।
ওই গুলিই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে বাপনের গায়ে লাগে।”
ঘটনাস্থলেই বাপনের মৃত্যু হয়। মৃতদেহটি তাঁর বাড়ির সামনে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন আরাবুল-অনুগামীরা। চলে আসেন আরাবুলও। তার ফাঁকে পাঁচুবাবুরও বাড়িতে এবং মোটরবাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। রমেশের দেহ উদ্ধার করার পরে বাপনের দেহ উদ্ধারে গিয়ে বাধা পায় পুলিশ। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ চলে। পরে জেলা পুলিশের কর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহ উদ্ধার করেন। এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী এবং র্যাফ মোতায়েন করা হয়।  
এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে ভাঙড়ে তৃণমূূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নতুন নয়। গত চার বছরে বহু বার সংঘর্ষে জড়িয়েছে আরাবুল এবং দলের জেলা পরিষদ সদস্য কাইজার আহমেদের অনুগামীরা। দলের রাজ্য স্তরের নেতাদের সামনেও প্রকাশ্যে এসেছে সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বছরখানেক আগেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূল যুবার এক সভায় হাতাহাতিতে জড়িয়েছিলেন আরাবুল এবং কাইজার। গত লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের সময়েও যাদবপুর কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী সুগত বসুর সমর্থনে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের একটি সভায় দুই গোষ্ঠী হাতাহাতিতে জড়ায়। চলতি বছরের গোড়ায় ভাঙড়-১ ব্লকে তৃণমূল নেতা রজ্জাক সর্দার খুনের পিছনেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ইঙ্গিত মিলেছিল।

আগুনে পুড়ে ছাই রমেশ ঘোষালের বাড়ির আসবাবপত্র।
এত কিছু সত্ত্বেও আরাবুলের বিরুদ্ধে কখনওই কোনও ব্যবস্থা নেননি তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। এমনকী, রেজ্জাক মোল্লার উপরে হামলার পরে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র আরাবুলকে ‘তাজা নেতা ও দক্ষ সংগঠক’ বলে প্রশংসাও করেছিলেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশই বলছেন, রাজ্য নেতৃত্বের প্রশ্রয় পেয়েই ক্রমশ বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন আরাবুল। যার পরিণতি আজকের ঘটনা।
আরাবুল অবশ্য গোটা ঘটনার জন্য পাঁচুবাবুকে দায়ী করেছেন। জমির দালালির কথা অস্বীকার করে তাঁর দাবি, “রমেশ আমার খুবই ঘনিষ্ঠ। পাঁচুর নেতৃত্বেই হামলা হয়েছে। আমি ঘটনার পরে গিয়েছি।”
যদিও দলীয় নেতাদের যে কোনও অপকর্মকে সাধারণ ভাবে ‘ছোট ঘটনা’ বলে উড়িয়ে দিতে অভ্যস্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশেষে আরাবুলের উপরে ক্ষুব্ধ বলে তৃণমূলের অন্দরের একটি সূত্রের দাবি। মুকুল রায়কে গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
আর দু’জন খুন হওয়ার পরেও তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “এটা যে হেতু দলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার, দলের জেলা নেতৃত্বকে দ্রুত রিপোর্ট পাঠাতে বলেছি।” ওই রিপোর্ট পেলে মুকুল রায়, সুব্রত বক্সী, অরূপ বিশ্বাস এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি। দলের কেউ দোষী হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন পার্থ।

পাঁচু মণ্ডলের পোড়া মোটরবাইক। ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন জেলার পুলিশ সুপার প্রবীণকুমার ত্রিপাঠী।
তৃণমূল সূত্রের অবশ্য দাবি, পুলিশ-প্রশাসনকেও এ বার নিরপেক্ষ ভাবে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও এ দিনের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহত দুই তৃণমূল কর্মীর পরিবার এবং গ্রামবাসীরা। তাঁদের বক্তব্য, পুলিশের সামনেই হামলা হল। অথচ, পুলিশ ছিল দর্শক। বস্তুত, পুলিশের যে টহলদার গাড়ি ওই গ্রামে ছিল, সেখানে দুই কনস্টেবল এবং এক জন এএসআই ছিলেন। রমেশ খুনের পরে আরও কিছু পুলিশ আসে। কিন্তু তাঁদেরই বক্তব্য, শুধু লাঠি হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যেত না। তাই তাঁরা এগোতে সাহস করেননি। পরে অবশ্য আশপাশের থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী আসে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন, “পুলিশের সামনেই গুলি চলার কথা আমারও কানে এসেছে। বিভাগীয় তদন্ত করা হবে।” এ দিনের ঘটনায় রাত পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ভাঙড়ের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আরও এক বার শাসক দলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “যা চলছে তাকে আর যাই হোক প্রশাসন বলা যায় না। লুঠের রাজত্ব চলছে। তার ফলেই এই নৈরাজ্য এবং খুনোখুনি।” প্রবীণ কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়ারও অভিযোগ, “পুলিশ ও প্রশাসনকে ঠুঁটো জগন্নাথ করে রেখে শাসক দলের বিভিন্ন গোষ্ঠী আর্থিক ফায়দা তোলার কাজ করছে। তার ফলেই এই পরিস্থিতি।” সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু বলেন, “যত দিন যাবে ততই তৃণমূলের উপরে তৃণমূলের এই আক্রমণ বাড়বে। পুলিশকে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখা হচ্ছে। আর পুলিশের কিছু বড় কর্তা শীর্ষ নেতৃত্বের সুনজরে থাকার জন্য নিচুতলার কর্মীদের অ্যাকশন নিতে বারণ করছেন। মুখ্যমন্ত্রী আবার এই অফিসারদের ধন্য ধন্য করছেন!”

********************

দাপট কি কমবে আরাবুলের, প্রশ্ন তৃণমূলেই

নিজস্ব সংবাদদাতা (সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা)

কলকাতা, ২৬ অক্টোবর, ২০১৪






2
তাঁর কীর্তি অনেক!
আট বছর আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার লেদার কমপ্লেক্স থানার ওসি-কে মারধোর করেছিলেন। তবে খবরের শিরোনামে এসেছিলেন ২০১২ সালের ২৪ এপ্রিল ভাঙড় কলেজের এক শিক্ষিকাকে জগ ছুড়ে মেরে। সেখানেই থামেননি কীর্তিমান! ২০১৩-র ৬ জানুয়ারি কাঁটাতলায় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লার উপর হামলা করেন তিনি। সে যাত্রা গ্রেফতার হয়েছিলেন। কিন্তু তাতে ভাঙড়ে তাঁর দাপট কমেনি। কিছু দিন আগেই ভাঙড়-২ নম্বর ব্লকের কাশীপুর থানায় গিয়ে হম্বিতম্বি করার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। কিন্তু কী পুলিশ, কী তাঁর দল কেউই ভাঙড়ের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক আরাবুল ইসলামের রাশ টানেনি। শনিবার ভাইফোঁটার দিনে ভাঙড়ের বেঁওতা গ্রামে দলেরই দুই কর্মীর খুনের ঘটনার পরে তৃণমূলের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছে, এর পরেও কি আরাবুল বহাল তবিয়তে থাকবেন?
কালীঘাটে এ দিন দলের নেতা ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের ভাইফোঁটা দিচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই পর্ব মিটতে নেত্রীর উপস্থিতিতেই নেতাদের কেউ কেউ ভাঙড়ের প্রসঙ্গ তোলেন। আর কত দিন আরাবুলের দাপট সহ্য করা হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য বিস্তারিত আলোচনায় যাননি বলেই দলীয় সূত্রের খবর। (আরও....)


*********************

চন্দনের বাটি হাতে দাদার দেহ দেখল বোনেরা

শুভাশিস ঘটক (সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা)

ভাঙড়, ২৬ অক্টোবর, ২০১৪


ধান-দুব্বো তোলা হয়ে গিয়েছিল সাত সকালেই। পছন্দ করে কেনা হয়েছিল পাজামা-পাঞ্জাবিও।কিন্তু দাদাকে ভাইফোঁটা’টা আর দেওয়া হল না দুই বোনের।নিয়তি মুখোপাধ্যায় আর মালতি চক্রবর্তীশনিবার সকালে গুলিতে ঝাঁঝরা ভাঙরের বেঁওতা গ্রামের রমেশ ঘোষালের দুই বোন। বাপের বাড়ি আসার পথেই খবরটা শুনেছিলেন--তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে গুলিতে শেষ হয়ে গিয়েছে তাঁদের দাদা। বাড়িতে ঢুকে তাঁরা দেখলেন রক্তের দাগ। আগুনে খাক হয়ে যাওয়া দাদার দোকান, মোটরবাইক। পুড়ে যাওয়া বাড়ি আর সাদা কাপড়ে মোড়া দাদার রক্তাক্ত দেহ।
নিয়তির বাড়ি জয়নগরের দক্ষিণ বারাসতে। মালতি কুলতলির জালাবেড়িয়ার বাসিন্দা। বাপেরবাড়ি যাবেন বলে ব্যাগপত্র গুছিয়ে শনিবার সাতসকালে রওনা দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু শনিবার সেখানে আর তাঁদের বেশি ক্ষণ থাকা হয়নি। দাদা খুন হওয়ায় দিনভর কাটাতে হল লেদার কমপ্লেক্স থানায়। দিনের শেষে কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না দুই বোনই। কোনও রকমে তাঁরা বলেন, “কত আনন্দ নিয়ে আসছিলাম। ভেবেছিলাম হই-হুল্লোড় হবে। এমন একটা দিনে রাজনীতির জন্য যে দাদাকে বলি হতে হবে ভাবতেও পারছি না।” (আরও.....)

**********************

কাছ থেকেই গুলি বাপনকে, ইঙ্গিত ময়না-তদন্তে

শুভাশিস ঘটক (সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা)

কলকাতা, ৩১ অক্টোবর, ২০১৪


ভাঙড়ে ভাইফোঁটার দিন নিহত বাপন মণ্ডলের মৃত্যু কী ভাবে হয়েছিল—তা নিয়ে প্রাথমিক ধারণা বদলাচ্ছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা মনে করেছিলেন, দূর থেকে ছোড়া গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে বিঁধেছে বাপনের গায়ে। কিন্তু পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রের খবর, ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অন্য ইঙ্গিত দিচ্ছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, একেবারে গায়ের সঙ্গে (পয়েন্ট-ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ) ওয়ানশটার ঠেকিয়ে গুলি করা হয় বাপনকে। গুলি চালানো হয়েছিল গলার নলি থেকে নীচের দিক তাক করে। দূর থেকে ছোড়া গুলি এসে বিঁধলে যেমন ক্ষত হওয়ার কথা, বাপনের শরীরে তেমন কিছু মেলেনি।
গত ২৫ অক্টোবর, ভাইফোঁটার দিন ভাঙড়ের বেঁওতা গ্রামে গুলিতে খুন হন তৃণমূল কর্মী রমেশ ঘোষাল ও বাপন মণ্ডল। রমেশকে খুনের ঘটনায় অভিযোগ ওঠে সদ্য বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের দলবলের বিরুদ্ধে। আরাবুল আবার পাল্টা দাবি করেন, বেঁওতা ১ পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান সত্যজিৎ মণ্ডল ওরফে পাঁচু ও তাঁর দলবলের ছোড়া গুলিতে বাপনের মৃত্যু হয়েছিল। (আরও....)




***************
The Telegraph
Monday , October 27 , 2014 

7 of TMC arrested for Bhangar killings

Oct. 26: Seven Trinamul Congress workers, including a former gram panchayat pradhan opposed to local strongman Arabul Islam, were arrested early today in connection with the murder of two party activists from rival factions in Bhangar yesterday.
The names of Satyajit Mondal, a former chief of the Beonta-I gram panchayat, and his son Tapas figure in the FIR lodged by the mother of Bapon Mondal, an Arabul faction member who was among the two shot dead. The two were picked up from a relative’s home in Howrah.
In her FIR, Bapon’s mother Chaiti has named 11 people, of whom three more have been arrested.
The wife of Ramesh Ghosal, a Satyajit loyalist who died of bullet injuries, filed a counter-FIR in which no one was named. Police have arrested two persons believed to be members of Arabul’s group following investigations based on the complaint by Ramesh’s wife Asha. (More......)



          কাদের স্বার্থে বর্ধমান এস পি বিস্ফোরণের প্রমাণ নষ্ট করল এবং ভুল রিপোর্ট দিয়ে তদন্ত ভুলপথে চালিত করতে চাইলেন কাকে বাঁচাতে?
           

No comments:

Post a Comment