Friday, September 5, 2014

Anarchy and lawlessness in Education is what Mamta contributed in West Bengal

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একটা-দুটো খারাপ ঘটনাকে বড় করে দেখানো হচ্ছে, সংবাদমাধ্যমকে তোপ মুখ্যমন্ত্রীর


ফের কার্যত সেই ছোট ঘটনার তত্ত্ব। এবার বিষয়-শিক্ষা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একটা-দুটো খারাপ ঘটনা ঘটছে। অথচ শিক্ষা মানেই অশান্তি দেখানো হচ্ছে। শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে এ ভাবেই সংবাদমাধ্যমকে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
সাম্প্রতিককালে একের পর এক কলেজ ক্যাম্পাসে ধারাবাহিক ভাবে নৈরাজ্যের ছবি দেখেছে রাজ্যবাসী। কোথাও নকলের দাবিতে অধ্যক্ষকে ঘেরাও, কোথাও বিএডে ভর্তি করানোর নামে টাকা তোলা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ঘরের সামনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতির বিক্ষোভ, কোথাও আবার, অধ্যক্ষ নিগ্রহ। কিন্তু, এত কিছুর পরও মুখ্যমন্ত্রীর চোখে কিছুই ধরা পড়ছে না! তাঁর চোখে যত দোষ সংবাদমাধ্যমের!
বিরোধীরা কটাক্ষ করে বলছেন, একটা-দুটো বলতে মুখ্যমন্ত্রী কটা বোঝেন, তা তিনিই বলতে পারবেন! কারণ, শিক্ষায় বিশৃঙ্খলার তিন বছরের ছবিটা যদি তালিকার আকারে তুলে ধরা যায়, তাহলে সেটা একটা-দুটো কেন, সেঞ্চুরিও হাঁকাতে পারে! আর রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্র যদি ‘অল ইজ ওয়েল’ই হয়ে থাকে, তাহলে গত ২ সপ্তাহের মধ্যেই কেন একের পর এক অধ্যক্ষকে ইস্তফা দিতে হল? প্রশ্ন বিরোধীদের। সেইসঙ্গে তালিকাটাও হাজির।
ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়া বিবেকানন্দ কলেজ, নদিয়ার চাপড়া বাঙালঝি কলেজ, মেদিনীপুর কমার্স কলেজ এবং মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।
এটা অধ্যক্ষদের পদত্যাগের দু’সপ্তাহের পরিসংখ্যান! এর আগে গেলে এরকম নজির আরও মিলবে। বিরোধীদের আরও প্রশ্ন, শিক্ষাঙ্গনে যদি সত্যিই মুখ্যমন্ত্রীর কথা মতো একটা-দুটো খারাপ ঘটনা ঘটে থাকে, তা হলে কেন বার বার খোদ শিক্ষামন্ত্রীকে ছাত্রদের সংযত হওয়ার বার্তা দিতে হচ্ছে?
তাত্‍পর্যপূর্ণ বিষয় হল, শুক্রবার শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য  ঘেরাও সংস্কৃতি ঠেকাতে অনলাইনে অভিযোগের ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করলেন। একটা-দুটো খারাপ ঘটনা ঘটলে কি ঘেরাও ঠেকাতে উপাচার্যের ওয়েবসাইট চালু করতে হত? কিংবা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতির মাথার ওপর বসাতে হত নজরদারি কমিটি?
বিরোধীরা কটাক্ষ করে এও বলছেন, শিক্ষাঙ্গনে অশান্তির ঘটনাকে লঘু করে দেখানোর পরিণাম যে ভাল হয় না, তা বহু আগেই বোঝা উচিত ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের! কারণ, শুরুটাতো হয়েছিল রায়গঞ্জ দিয়ে। সেইসময় তৃণমূল নেতা তিলক চৌধুরীদের যদি মুখ্যমন্ত্রী ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে বলে প্রশ্রয় না দিতেন, তাহলে আর পরে হয়ত দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজ তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সমর্থকদের হাঙ্গামা, হাবড়া শ্রীচৈতন্য কলেজে অধ্যক্ষের ঘরে ভাঙচুর, কিংবা রায়গঞ্জের সুরেন্দ্রনাথ কলেজ ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনা ঘটত না। কলকাতার বুকে খিদিরপুর কলেজের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার সাহস দেখাত না তৃণমূল ছাত্র পরিষদ! এমনটাই দাবি বিরোধীদের। তারওপর, এসবই সাম্প্রতিক ঘটনা! তাই শিক্ষাঙ্গনে বিশৃঙ্খলার পূর্ণাঙ্গ তালিকাটা একবার ঝালিয়ে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যদি সংবাদমাধ্যমকে আক্রমণের পরিবর্তে নৈরাজ্যকারীদের শাসন করে পরিস্থিতিটা বদলাতে সচেষ্ট হন, তাহলেই রাজ্যের মঙ্গল হবে, নইলে বিশৃঙ্খলার তালিকা বেড়েই চলবে বলে ধারণা শিক্ষামহলের একাংশের।

No comments:

Post a Comment