কী ভাবছেন শ্যামসুন্দরবাবু? তাঁর কথায়, “সেবি কী বলেছে, আমি ভাল করে জানি না।” কিন্তু সংস্থার এক জন কর্ণধার হিসেবে সেটা কী করে অজানা থাকল শ্যামসুন্দরবাবুর? “যদি জানতাম, তা হলে নিশ্চয়ই আপনাকে জানাতাম,” বলছেন তিনি। তাঁর প্রযোজনা সংস্থায় অর্থলগ্নির টাকা খাটে কি না, সে সম্পর্কে স্পষ্ট উত্তর মেলেনি শ্যামসুন্দরবাবুর কাছ থেকে।
টলিউডের বাজারে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার টাকা খাটার বিষয়টি অবশ্য একেবারেই নতুন নয়। এই জাতীয় বহু সংস্থাই বাংলা ছবিতে টাকা ঢেলেছিল। ২০১১-১২তে টলিউডে ৬০-৭০ শতাংশ ছবিই প্রযোজনা করত এই সংস্থাগুলো। সারদা কেলেঙ্কারির পরে অবশ্য তারা বেশির ভাগই বিনোদন ব্যবসা থেকে নিজেদের গুটিয়ে ফেলে।
প্রয়াগ গ্রুপ, অ্যালকেমিস্ট, রেম্যাক ফিল্ম, রুফার্স মিডিয়া, সিলিকন গ্রুপ অব কোম্পানিজ, আইকোর এন্টারটেনমেন্ট রাতারাতি নিজেদের সরিয়ে নেয়। ‘ভাল থেকো’, ‘একটি আষাঢ়ে গল্প’, ‘আমি সায়রা বানু’, ‘জলে-জঙ্গলে’, ‘কাঁচের দেওয়াল’-এর মতো বহু ছবি মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। এমনকী ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু কমিউনিকেশনস’-এর ব্যানারে ‘মনের মানুষ’, ‘ল্যাপটপ’ ও ‘শব্দ’ বা ‘আশ্চর্য প্রদীপ’-এর মতো ছবি করা ‘রোজ ভ্যালি’-ও নিজেদের বিনোদন বিভাগ বন্ধ করে দেয়।
‘গ্রিনটাচ’-এর বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ইদানীং টালিগঞ্জের কার্যত নিয়ন্ত্রক বলে পরিচিত যুবকল্যাণ ও আবাসনমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস মন্তব্য করতে চাননি। প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতা বলছেন, “ঘটনাটা দুর্ভাগ্যজনক। বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার উপস্থিতি টালিগঞ্জের অনেক ক্ষতি করেছে।” তবে ইন্ডাস্ট্রির বেশির ভাগেরই একটাই প্রশ্ন, “কাউকে বাইরে থেকে দেখে কী করে বোঝা যাবে তার টাকার উৎস কী?”
তবে কি এখনও অনেক অর্থলগ্নি সংস্থা বকলমে টালিগঞ্জে টাকা ঢেলে চলেছে? প্রযোজক পীযূষ সাহার দাবি,  বেশ কিছু সংস্থা ঝাড়খণ্ড, বিহার থেকে টাকা তুলে টালিগঞ্জে বিনিয়োগ করছে। প্রসঙ্গত, সেবি-র নির্দেশিকায় গ্রিনটাচ-এর টাকা তোলার ক্ষেত্র হিসেবেও বিহারের কথাই বলা হয়েছে।
শ্যামসুন্দরবাবুর সঙ্গে কাজ করা কলাকুশলীরা এ ব্যাপারে কিছু জানেন কি? পরমব্রত বলেন, “আমি এটুকুই জানি, শ্যামসুন্দরবাবু সৎ মানুষ। আমি মনে করি, উনি কখনওই আইনবিরোধী কাজ করবেন না।” রাজ চক্রবর্তীর মন্তব্য, “ব্যাপারটা ঠিক জানি না। শুধু চাইব, ওঁর যেন কোনও ক্ষতি না হয়।”