Saturday, October 25, 2014

Bengal Govt winds up Shyamal Sen commission



সেন কমিশনে তালা, অথৈ জলে আমানতকারীরা, সরকারকেই দুষলেন শ্যামল সেন

Last Updated: Friday, October 24, 2014 - 20:51


সেন কমিশনে তালা, অথৈ জলে আমানতকারীরা, সরকারকেই দুষলেন শ্যামল সেন
কলকাতা: সারদার সব আমানতকারীর টাকা ফেরত দেওয়ার আগেই বন্ধ  হয়ে গেল সেন কমিশন। এ জন্য, সরকারের দিকেই আঙুল তুললেন কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্যামল সেন। রাজ্যকে দেওয়া রিপোর্টে তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, সরকার আদালতে গিয়ে ইডি-র বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তি
নিজের হেফাজতে নিতে পারত। সেই সম্পত্তি বিক্রি করেই আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া যেত। কেন শ্যামল সেন কমিশন তৈরি করেছিল রাজ্য সরকার? লক্ষ্য ছিল তিনটি।
সারদার আমানতকারীদের ক্ষতিপূরণ দেবে কমিশন। কমিশন সারদা-কাণ্ডে দোষীদের চিহ্নিত করবে। সারদার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে বিক্রির ব্যবস্থাও করবে সেন কমিশন।
গত দেড় বছরে কী করেছে সেন কমিশন?
ক্ষতিপূরণ চেয়ে জমা পড়ে প্রায় আঠারো লক্ষ আবেদন।

পাঁচ লক্ষ আমানতকারীকে টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে।
গত দেড় বছরে কমিশনকে দুশো ছিয়াশি কোটি পঞ্চাশ লক্ষ টাকা দিয়েছে রাজ্য সরকার।
ক্ষতিপূরণ দিতে কমিশনের খরচ হয়েছে ২৫১ কোটি ২২ লক্ষ টাকা।  
অর্থ দফতর টাকা না দেওয়ায় সেন কমিশন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র দফতর। সরকারকে চারশো পাতার একটি রিপোর্ট দিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্যামল সেন। রিপোর্টে তিনি বলেছেন ''কমিশনের হাতে অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির কয়েকটি সম্পত্তি রয়েছে। ইডি যে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে, রাজ্য আদালতে গিয়ে তা নিজেদের হেফাজতে নিতে পারে। সেই সম্পত্তি বিক্রি করেই টাকা ফেরানো সম্ভব।''
বিচারপতি শ্যামল সেনের বক্তব্য অনুযায়ী, কোষাগার থেকে অতিরিক্ত টাকা খরচ না করেই আরও অনেক প্রতারিতদের টাকা মেটাতে পারত সরকার।
কমিশন বন্ধ করে দেওয়া নিয়েও শ্যামল সেনের রিপোর্টে রয়েছে আক্ষেপের সুর। তিনি বলেছেন, ''রাজ্যের উচিত ছিল আগেই আদালতে যাওয়া। তা হলে মাঝপথে কমিশন গোটাতে হতো না। আশা ছিল, ক্ষতিপূরণের জন্য সরকারের কাছ থেকে আরও অর্থ পাওয়া যাবে।''
শ্যামল সেন কমিশন আচমকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অথৈ জলে চিটফান্ডের প্রতারিত আমানতকারীরা। তাঁদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া সরকারের দায়িত্ব বলে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্যামল সেন তাঁর রিপোর্টে জানিয়েছেন।


***********

সম্পাদকীয় ২ (সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা)

তবু ভাল

২৫ অক্টোবর, ২০১৪, ০০:০৫:১৩



সদ্য-বিলুপ্ত শ্যামল সেন কমিশন সম্বন্ধে যত কথা বলিবার, তাহার সবটুকু নেতিবাচক নহে। এই কমিশনের অন্তত একটি ইতিবাচক দিক আছে। তাহা হইল, কমিশনটি আর নাই। এমন অপ্রয়োজনীয়, অনৈতিক, অস্বচ্ছ এবং বিপজ্জনক একটি কমিশন যে তৈরি হইয়াছিল, এবং এত দিন টিকিয়া ছিল, তাহা পশ্চিমবঙ্গের পক্ষে অতি দুর্ভাগ্যের। বহু বিলম্বে হইলেও সরকার কমিশনটির ঝাঁপ ফেলিয়াছে, তাহাই বাঁচোয়া। সারদা বা অন্য কোনও ভুঁইফোড় আর্থিক সংস্থায় যাঁহারা টাকা খোয়াইয়াছেন, তাঁহাদের দুর্ভাগ্যের দায় সরকারের নহে। তাঁহাদের অনেকেই দরিদ্র হইলেও নহে। তাঁহারা তৃণমূল কংগ্রেসের বর্তমান বা ভবিষ্যৎ ভোটার হইলেও নহে। এমন জালিয়াত আর্থিক সংস্থার বাড়বাড়ন্ত রোধ করা সরকারের কাজ ছিল। সরকার তাহাতে ব্যর্থ। পক্ষান্তরে, এই সন্দেহ ক্রমশই বাড়িতেছে যে, সেই সংস্থাগুলির ফুলিয়া ফাঁপিয়া উঠায় শাসক দলের প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল। কিন্তু রাজকোষের টাকা খরচ করিয়া সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করা চলে না। কোনও বেসরকারি সংস্থা এবং কিছু ব্যক্তির মধ্যে হওয়া চুক্তির ব্যর্থতার দায়ভার সরকারের উপর বর্তায় না। মুখ্যমন্ত্রী অনৈতিক ভাবে করদাতার উপর সেই বোঝা চাপাইয়াছেন। প্রসঙ্গত, তাঁহাকে স্মরণ করাইয়া দেওয়া যাউক, সিবিআই এই কেলেঙ্কারির তদন্ত করিতেছে। আমানতকারীদের টাকা ফিরাইবার দায় তাহাদের নাই। কাজেই, ‘এই বার সিবিআই টাকা ফেরত দিক’ মর্মে রাজনীতিটি, পশ্চিমবঙ্গের মানেও, বড় কাঁচা।
কমিশনে প্রায় সতেরো লক্ষ আবেদন জমা পড়িয়াছিল। তাহার এক-তৃতীয়াংশেরও কম মানুষ ক্ষতিপূরণ পাইয়াছেন। কমিশনের প্রধানই স্বীকার করিয়াছেন, বহু আবেদনপত্র এখনও বস্তাবন্দি পড়িয়া আছে। তাহা হইলে কীসের ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণ-প্রাপকদের বাছিয়া লওয়া হইল? জানিবার উপায় নাই। এই অস্বচ্ছতাই সন্দেহের জন্ম দেয়। কেহ অনুমান করিতেই পারেন, ক্ষতিপূরণ পাইবার যোগ্যতা রাজনৈতিক আনুগত্যের অঙ্কে স্থির হইয়াছে। অনুমানটি মিথ্যা, এমন দাবি করিবার কোনও উপায় কমিশনের নাই। তাঁহারাই সেই উপায় রাখেন নাই। এক্ষণে একটি প্রশ্ন উঠিতে পারে। এই কমিশন যে সোজা পথে চলিবে না, তাহা ভূতপূর্ব বিচারপতি শ্যামল সেন মহাশয়ের অনুমানের অতীত ছিল, এ কথা মানিয়া লওয়া মুশকিল। এমন একটি অনৈতিক, অস্বচ্ছ কমিশনের প্রধান হইতে তিনি সম্মত হইয়াছিলেন কেন?
কমিশন যে সকল আবেদনকারীকেই টাকা ফিরাইয়া দিতে পারে নাই, তাহা সুসংবাদ। কেবল রাজকোষের পক্ষে নহে, রাজ্যের ভবিষ্যতের পক্ষেও। সারদা-কাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ফিরাইয়া দেওয়ার খেলাটির সর্বাপেক্ষা বিপজ্জনক দিক ছিল, তাহা মানুষকে আরও বেপরোয়া করিয়া তুলিত। মানুষ জানিতেন, ঝুঁকির আমানতে টাকা রাখিয়া ঠকিলেও ভয় নাই— রাজ্য সরকার রক্ষাকর্তার ভূমিকা লইবে। ফলে, এই ধরনের ঝুঁকির আকর্ষণ বাড়িত, সুতরাং বিপদও। পরিণামবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখিলে এই ‘মরাল হ্যাজার্ড’ তৈরি করাই সেন কমিশনের বৃহত্তম কুপ্রভাব। সকলে টাকা না পাওয়ায় তবুও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে একটি অনিশ্চয়তা রহিল। যাঁহারা টাকা পাইলেন না, তাঁহাদের প্রতি কোনও অন্যায় হয় নাই। বরং, যাঁহারা পাইয়াছেন, তাঁহাদের প্রাপ্তি অন্যায়। কিছু মানুষ অন্যায় সুবিধা পাইয়াছেন বলিয়া সকলকেই তাহা দিতে হইবে, এমন দাবি বুঝি এই রাজ্যেই সম্ভব।

************

*******************


Another name of CORRUPTION is Mamta - Lake Mall lease contract violated to give aide, financial benefit 

No comments:

Post a Comment