Sunday, September 14, 2014

West Bengal state sponsored goons couldn't rig by-election for vigilant central force

কড়া নজরদারি, বহিরাগতেরা রইলেন বাইরেই

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য ও নির্মল বসু (সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা)

কলকাতা, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৪:০২:৫৯



বসিরহাটের এক ভোটকেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্য।

রাত দুপুরে লজের ঘরের দরজায় ‘ঠকঠক’। ভিতরের বাসিন্দা দরজা খুলতেই মুখোমুখি হলেন সশস্ত্র বাহিনীর। বাহিনীর সঙ্গে থাকা পদস্থ অফিসারেরা জানতে চাইলেন পরিচয়। ছাড় দিলেন চিত্র সাংবাদিক পরিচয় সম্পর্কে নিঃসন্দেহ হয়ে। লজের বাগানে পায়চারিরত এক যুবকও একই প্রশ্নের মুখে পড়লেন ও ছাড়া পেলেন নির্বাচনী দায়িত্ব নিয়ে আসা সরকারি আধিকারিক বলে। হলটা কী?
শুক্রবার রাতে সন্দেহজনক ‘বহিরাগত’র সন্ধানে বসিরহাট সদর ও লাগোয়া এলাকার গোটা তিরিশেক হোটেল, অতিথিনিবাস ঢুঁড়ল কেন্দ্রীয় বাহিনী ও তাদের সঙ্গী রাজ্য পুলিশ। গত কয়েক দিন ধরেই বসিরহাটে বহিরাগতদের জমায়েত নিয়ে চাপান-উতোর চলছিল। শনিবার, ভোটের দিনও নির্বাচনী কেন্দ্রের বাইরের এলাকায় শিবির করে লোক জড়ো করা হয়েছিল। কিন্তু কড়া নিরাপত্তার ফাঁক দিয়ে মাছিও গলল না। ২৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরদারিতে শনিবার নির্বিঘ্নে ভোট মিটল বসিরহাট দক্ষিণে।
গত কয়েক দিন বসিরহাট-হাসনাবাদ-টাকির নানা এলাকায় হাত-কাটা, গাল-কাটা গোছের লোকজনকে জড়ো হতে দেখে গণ্ডগোলের আশঙ্কা করছিলেন বাসিন্দারা। বৃহস্পতি-শুক্রবার পুলিশ অবশ্য হোটেল-লজ-অনুষ্ঠান বাড়ি ফাঁকা করেছে। শুক্রবার রাতে বসিরহাটের নির্বাচনী পর্যবেক্ষক ভুবনেশ যাদব নিজেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে বেরিয়েছিলেন অভিযানে। সঙ্গে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীও।
ভরসা থাকুক। বসিরহাট শহরে
বিশ্বনাথ বণিকের তোলা ছবি।
রাতের মতো দিনেও নজরদারির কড়াকড়ি বজায় ছিল। শনিবার দিনভর বুথের বাইরে লাইট মেশিনগান, ইনস্যাস রাইফেল হাতে নজরদারি ছিল জওয়ানদের। বসিরহাটে ঢোকার চারটি ‘পয়েন্ট’—হরিশপুর, কাটাখালি, বিরামনগর ও ইটিন্ডা কার্যত ‘সিল’ করে দেওয়া হয়। রাজনৈতিক কর্মীরা কি তা বলে জড়ো হননি? বিজেপি-র শ’দুয়েক লোককে দেখা গেল বসিরহাটের ভেদিয়া-চৌমাথায়। জায়গাটি বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে না। জানা গেল, তাদের অনেকেই বাইরে থেকে এসেছেন।
তবে বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, “এটা শিবির নয়। এখানে নেতা-কর্মীরা ভোট নিয়ে আলোচনা করছেন।” তাঁর সংযোজন, “নিরাপত্তা এ বার আঁটোসাঁটো।” সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক গৌতম দেবও জানিয়েছেন, ভাঙড় থেকে তৃণমূলের লোকজন টাকিতে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। তাদের হাসনাবাদের আমলানি কাছে আটকায় সিপিএমের ছেলেরা। পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী চলে আসায় গোলমাল বাড়েনি।
বুথের সামনে কড়া পাহারা। শনিবার
শিবহাটির একটি স্কুলে নির্মল বসুর তোলা ছবি।
বসিরহাটের খোলাপোতায় (এটিও ভোটের বাইরের এলাকা) দলের কন্ট্রোল রুমে এসেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, জেলা পর্যবেক্ষক রথীন ঘোষ, দলের নেতা নির্মল ঘোষ, সাংসদ ইদ্রিস। তাছাড়াও বহু যুবকের ভিড় ছিল সেখানে। জ্যোতিপ্রিয় বলেন, “ভোট পরিচালনা করতে সকলে শিবির করে। আমাদেরও হয়েছে। সেখানে অনেকে আসবেন, এতে এমন কী আছে?” তবে কংগ্রেস প্রার্থী অসিত মজুমদারও বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্যই বহিরাগতেরা কিছু করতে পারেনি।”
ভোট-ব্যস্ততায় রাজ্য পুলিশ ও সিআরপি।
বসিরহাট থানার সামনে দেবাশিস রায়ের ছবি।

No comments:

Post a Comment